Thursday, January 23, 2025
বাড়িরাজ্যসিপিআইএম কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে হুলুস্থুল জিবি হাসপাতালে, মৃতদেহ ছিনিয়ে নেয় পুলিশ, ক্ষোভ...

সিপিআইএম কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে হুলুস্থুল জিবি হাসপাতালে, মৃতদেহ ছিনিয়ে নেয় পুলিশ, ক্ষোভ আছড়ে পড়ল পুলিশের সদর কার্যালয়ের সামনে 

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১ ডিসেম্বর :  বুধবার চড়িলামে রাজনৈতিক খুনের শিকার হয়েছেন শহিদ মিঞা নামে সিপিআইএমের ৭৫ বছর বয়সী এক কর্মী। বৃহস্পতিবার মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে না দিয়ে পুলিশ জিবি হাসপাতালের মর্গে থেকে নিয়ে যেতে চাইলে সিপিআইএম কর্মীরা এবং পরিবার-পরিজনেরা মৃতদেহ ঘেরাও করে রাখে। আটকে রাখা হয় শববাহী গাড়ি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ সিআরপিএফ লেলিয়ে দিয়ে মৃতদেহ পরিবার-পরিজনদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। মারধর করা হয় পরিবারের লোকজনদের বলে অভিযোগ শহীদ মিয়ার ভাইয়ের।

ঘটনার সাথে সাথে ক্ষোভ আঁচড়ে পড়ে পুলিশের সদর কার্যালয়ে। পুলিশের সদর কার্যালয় ঘেরাও করে সিপিআইএম কর্মীরা এবং শহিদ মিঞার পরিবার-পরিজনেরা। দীর্ঘক্ষণ চলে হুলুস্থুল। যুদ্ধ সাজে দাঁড়িয়ে পড়ে পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনী। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অজয় কুমার দাস। কিন্তু দীর্ঘ প্রচেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে নি। এই পুলিশ আধিকারিক সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী এবং সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলতে গেলে পরিস্থিতি আরো বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পুলিশ এবং সিপিআইএম কর্মী সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। কিন্তু সদর পুলিশ আধিকারিক সেখানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে শেষ পর্যন্ত সিপিআইএম নেতৃবৃন্দদের সাথে দাঁড়িয়ে থাকেন। সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, এই পুলিশ আধিকারিকের কাছে দাবি জানান যাতে দ্রুত মৃতদেহ পুলিশের সদর কার্যালয়ের সামনে এনে পরিবার ও কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কারণ মৃতদেহ শেষ শ্রদ্ধার জন্য সিপিআইএম রাজ্য দপ্তরের সামনে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু পুলিশ আধিকারিক অনীহা প্রকাশ করলে তখন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক এ পুলিশ আধিকারিকের কাছে প্রশ্ন তুলে বলেন কেন রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুলিশ এগুলি করছে ? কিন্তু এর কোন জবাব দিতে পারেননি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কালো চশমা পরিধানকারী পুলিশ বাবু।

পুলিশের সদর কার্যালয়ের সামনে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বক্তব্য রেখে বলেন, রাজনৈতিক খুনের শিকার শহীদ মিঞার মৃতদেহ শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে শেষকৃত্য সম্পূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অপরাধী সরকারের মেরুদণ্ডহীন পুলিশ মর্গের থেকে মৃতদেহ ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সারাদেশ দেখবে বলে ভয়ে মৃতদেহ সিআরপিএফ লেলিয়ে নিয়ে গেছে। আর এই পুলিশের সামনেই মানুষ খুন হয়, নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে পারে না। এতে স্পষ্ট রাষ্ট্রীয় শক্তির মদতে মানুষের সাংগঠনিক অধিকার এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা দিন দুপুরে কিভাবে ভূলন্ঠিত হয়েছে ডাক্তার মানিক সাহার সুশাসন। তিনি আরো বলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মার ইন্ধনে হয়েছে রাজনৈতিক খুন। তাই বুধবারে ঘটনার জন্য আসল খুনী হলো রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা। এখন আবার মৃতদেহ পরিবারে হাতে তুলে দিতে তালবাহানা করছেন। তাই আগরতলায় মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য দাবি জানানো হয় রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশকের কাছে।

দীর্ঘ ২ ঘন্টা বিক্ষোভ চলার পর পুলিশের সদর কার্যালয়ের ভেতর থেকে ছুটে আসেন এ আই জি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কিষাণ কুমার। তিনি মৃতের পরিবার এবং সিপিআইএম কর্মীদের আশ্বস্ত করেন যদি জিবি হাসপাতালে কোন ধরনের মানবতা অধিকার লঙ্ঘন হয়ে থাকে তাহলে এর সুষ্ঠু তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সেসব পুলিশ আধিকারীদের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত এই আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে সিপিআইএম কর্মীরা এবং মৃতের পরিবার।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য