স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৪ নভেম্বর : বড়পাথরীতে এক রক্তদান শিবিরে অগ্নিসংযোগ, তিপ্রা মথার সভা সেরে ফেরার সময় বড়মুড়ায় তিন থেকে চারটি গাড়ির উপর হামলা এবং কংগ্রেসের উপর বোমা নিক্ষেপ, গুলি চালানোর মতো ঘটনা গত কয়েকদিনে ঘটেছে। এর তীব্র নিন্দা জানায় প্রদেশ কংগ্রেস। আগামী ১৯ নভেম্বর ভারত জড়ো, ত্রিপুরা বাঁচাও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কংগ্রেস। এই কর্মসূচি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হয় তার জন্য পুলিশকে দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ এই মুহূর্তে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীকারিদের উপর নির্ভর হয়ে আছে। সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আশঙ্কা ব্যক্ত করে এমনটাই বললেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে তিপ্রা মথার পক্ষ থেকে দাবি তোলা হচ্ছে গ্রেটার তিপরাল্যান্ড। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। এটা কোন অসংবিধানিক নয়। দলের পক্ষ থেকে এটা দাবি করতেই পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন সুদীপ রায় বর্মন। তিনি বলেন পাহাড়ে পানীয় জলের অভাব, দূষিত জল খেয়ে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বহু মানুষ। সরকার সেই সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। আর বলেন ২০১৮ সালের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকারে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১০,৩২৩ এর সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্তু সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এতদিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি এখনো পালন করছে না সরকার। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সরকারের কাছে এই ইস্যু নিয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু সরকার তারপর তাদের সমস্যার সমাধান করার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। এবং জে আর বি টি ‘র ফলাফল প্রকাশ করার কোন লক্ষ্য সরকারের মধ্যে নেই বলে সরকারের এ ধরনের অবস্থান নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেন সুদীপ রায় বর্মন। আর এখন যখন পাঁচ বছর সম্পূর্ণ হতে চলেছে তখন আবার তারা নির্বাচনী ময়দানে নামার জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করতে শুরু করেছে। তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার জন্য সরকার আরো ৩০ হাজার সামাজিক ভাতা প্রদান করা হবে বলে গল্প তৈরি করেছে। এবং গরিব মানুষের কাছ থেকে ফর্ম জমা নিচ্ছে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর। আরো বলেন ত্রিপুরায় ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হবে বলে যে জমি দেখানো হচ্ছে সেই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তাই সরকারের দেখানো স্বপ্ন কতটা বাস্তবায়ন হবে সেটা নিয়ে তিনি রীতিমতো প্রশ্নের কাঠ গড়ায় দাঁড় করালেন শাসক দল বিজেপিকে। এদিনের আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকেও আক্রমণ করে বলেন ৭০ বছরের কিছু হয়নি বলে যে প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। ৭০ বছরে ভারতীয় জনতা পার্টি সরকারও পরিচালনা করেছে দেশ। এবং যেসব সম্পদ কংগ্রেস বিগত দিনে দেশে তৈরি করেছিল তা কর্পোরেটরদের হাতে তুলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেন তিনি। রাজ্য রাজনীতিতে চলছে ভাঙ্গা গড়ার হিড়িক। ভারতীয় জনতা পার্টির উপর আস্থা হারিয়ে প্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী এবং পুর সভার প্রতিনিধি শিবানী দাস যোগদান করলেন কংগ্রেসে। বিজেপির ১১ পরিবারের ৪৭ ভোটার এদিন প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে এসে যোগদান করেন। তাদের দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে দলে স্বাগত জানান বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন এবং প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা। প্রবীর চক্রবর্তী জানান যে কাঙ্ক্ষিত ইচ্ছা নিয়ে এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। কিন্তু এই সরকারকে মানুষ দুহাত তুলে সমর্থন করেছিল। একপ্রকার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হয়ে আছে রাজ্যে। নারী নির্যাতনের শিকারসহ একাধিক ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ তুলে সরকারের সাফাই গান গাইলেন শ্রী চক্রবর্তী।