স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ অক্টোবর : কমলপুর, কল্যানপুর সহ গত ১০ দিনে রাজ্যের চারটি ধর্ষণের এবং গণধর্ষণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আর এই ঘটনা ক্রমবর্ধমান ২০১৮ সাল থেকে বেড়ে চলেছে। ঘটনা গুলি ঝাপা চাপা দিতে মন্ত্রিসভার সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। এমনকি অভিযুক্তদের বাঁচাতে নানার চেষ্টা করছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। মন্ত্রিসভায় সদস্যদের সুশাসনের নামে এ ধরনের দুঃশাসন তীব্র নিন্দা জানায় বাম ছাত্র যুব সংগঠন। শনিবার ছাত্র যুবক ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা বলেন ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব।
তিনি দাবি করেন, ২০১৮ সালের আগে ত্রিপুরা রাজ্যে কোন গণধর্ষণের ঘটনা সংঘটিত হয়নি। বর্তমান সরকারের জামানায় ২০১৯ সাল থেকে ত্রিপুরায় গণধর্ষণের ঘটনার সংঘটিত হচ্ছে। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত দেখাতে পারছে না এই ধরনের ধিক্কারজনক ঘটনা গুলির বিরুদ্ধে কি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গত ১৯ অক্টোবর কুমারঘাটে যে ধর্ষণের ঘটনাকে সংগঠিত হয়েছে তার সাথে সরাসরি জড়িত মন্ত্রীর ছেলে। কিন্তু তাকে বাঁচাতে মন্ত্রী সভার সদস্যরা ২৪ ঘন্টা অন্তর অন্তর নিজেদের বক্তব্য পাল্টাচ্ছে। তাই দাবি করা হচ্ছে রবিবারের মধ্যে যাতে মন্ত্রী ধর্ষণকারী পুত্রের জন্য মন্ত্রিত্ব পদ থেকে ইস্তাফা দেওয়ার জন্য। যতদিন না পর্যন্ত সুষ্ঠু তদন্ত হবে ততদিন পর্যন্ত যাতে মন্ত্রী দায়িত্বে না থাকেন তার জন্য দাবি জানাচ্ছে বাম ছাত্র যুব ছাত্র সংগঠন বলে জানান নবারুণ দেব। তিনি বলেন ন্যাশনাল রেকর্ড ক্রাইম ব্যারো তথ্য অনুযায়ী গত ২০১৭ সালে ত্রিপুরা রাজ্যে নারী সংক্রান্ত ঘটনা হয় ৯৭২ টি, ২০১৮ সালে হয় ৯০৭ টি ঘটনা এবং ২০১৯ সালে এই ঘটনার পরিসংখ্যান বেড়ে দাঁড়ায় ১০৭০ টি। কিন্তু বর্তমানে এই ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর থানায় গিয়ে মামলা পর্যন্ত করতে পারছে না শাসকদলের কারণে। প্রকৃত পরিসংখ্যান আরো বেশি হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি পাশাপাশি এই দিন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। মহিলা কমিশন ত্রিপুরা রাজ্যে শুধুমাত্র একটা সাইনবোর্ড।
আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিক জানান, ত্রিপুরা দেশের মধ্যে নারী সংক্রান্তে অপরাধের জন্য এক বিপদজনক স্থানে উঠে এসেছে। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট মাসের মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধ সংগঠিত হয়েছে ২১৬৪ টি। এরমধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৩৮১ টি, গণধর্ষণের ঘটনা ২৬ টি এবং গণধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে সাত জনকে। গত সেপ্টেম্বর মাসে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেওয়া এই তথ্য। চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ টি আগস্ট পর্যন্ত ত্রিপুরা রাজ্যে ২৮ জন মহিলা খুন হয়েছে। ২৬৩ জন নাবালিকা নিখোঁজ হয়েছে। এই ঘটনাগুলির সাথে শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীরা জড়িত বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এসএফআই রাজ্য সভাপতি সোলেমান আলী, সম্পাদক সন্দীপন দেব সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।