স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ১৮ নভেম্বর : রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চলছে বন্দে ভারত অনুষ্ঠান। আর বন্দে ভারত অনুষ্ঠানে শিক্ষিকার অমানবিক আচরণের কারণে মাত্র সাত বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হলো এক ছাত্রীকে। সে আগরতলা স্থিত ক্ষুদিরাম বসু ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়ুয়া। মৃত ছাত্রীর নাম দীপান্বিতা পাল। বাড়ির যোগেন্দ্র নগর বনকুমারি এলাকায়।
শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মৃত ছাত্রীর পিতা দেবাশীষ পালের অভিযোগ গত ৯ নভেম্বর বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর এক অনুষ্ঠানের মধ্যে উনার মেয়েকে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখেন শিক্ষিকা। উনার মেয়ে দীপান্বিতা যখন শিক্ষিকাকে বলেছিলেন শারীরিকভাবে সে অসুস্থতা বোধ করছে তখন শিক্ষিকা বলেন শীতের দিন, রোদে দাঁড়ালে কিছু হবে না। শেষ পর্যন্ত মাথা ঘুরিয়ে পড়ে অসুস্থ হয়ে যায় সে।
অভিভাবকদের খবর দিলে তারা এসে জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসে দীপান্বিতাকে। কর্তব্যরত চিকিৎসক দীপান্বিতার শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানান সান স্ট্রোক হয়েছে। এতে শরীরের এক পাশ প্যারালাইসিস হয়ে গেছে। তারপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার পুনরায় স্টোক করে সে। মঙ্গলবার সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন উনার আদরের দ্বীপান্নিতা। তিনি আরো জানান, একমাত্র শিক্ষিকার কারণেই আজ মেয়েকে হারাতে হয়েছে। শিক্ষিকা যদি সেদিন ওনার মেয়েকে সাথে সাথে রোদ থেকে ছায়ার মধ্যে নিয়ে যেত তাহলে আজ উনার কুল খালি হত না। আরো অভিযোগ তুলে জানান, উনার মেয়ে অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে গিয়ে কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা খোঁজখবর নেননি।
পরবর্তী সময় জেলা শাসকের কাছে বিষয়টি জানানোর পর কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকায় গিয়ে হাসপাতালে দেখে এসেছেন। কিন্তু, তার যে অফুরন্ত ক্ষতি হয়েছে সেটা আজ কে মেটাবে? বটতলা মহাশ্মশান থেকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করলেন মেয়েকে হারানোর বেদনায় কাতর পিতা। উল্লেখ্য, মা-বাবার পর শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছেই সবচেয়ে নিরাপদ থাকার কথা ছাত্রছাত্রীরা। সেই জায়গায় একজন শিক্ষিকা কতটা অমানবিক এবং নিষ্ঠুর হলে একজন ছাত্রীকে রোদে দাঁড় করিয়ে রেখে অসুস্থ করে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিলেন সেটা নিয়ে অবশ্যই সাধারণ মানুষের মনে দাগ কাটবে। এটা নিয়ে কতটা তদন্ত হবে সেটা এখন দেখার বিষয়।

