স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ১৯ অক্টোবর : দল বিরোধী মন্তব্যের জন্য বিধায়ক তোফাজ্জল হোসেনকে শোকজ করল দল। কারণ ত্রিপুরা রাজ্যে বিজেপির পদ্মফুল ফোটানোর অন্যতম কারিগর হলেন বর্তমান সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। তাঁদের দ্বারা ২০১৮ সালের ত্রিপুরার মাটিতে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো শাসক দলের একজন বিধায়ক কতটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গেলে ত্রিপুরা রাজ্যের বিজেপির দুই প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে প্রকাশ্য সভায় জনগণের সামনে আক্রমণ করলেন। সে সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য। উনাকে মঞ্চে বসিয়ে তিনি বলেন, বক্সনগরের ফুটবল মাঠের জন্য সাংসদ উন্নয়ন তহবিল থেকে সংসদ রাজীব ভট্টাচার্য গ্যালারি নির্মাণের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন।
অথচ এই গ্যালারি নির্মাণের জন্য সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিকের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা টাকা দেননি। কিন্তু তাদের ভোট দিয়ে জনগণ সাংসদ বানিয়েছেন বলে প্রকাশ্যে বললেন স্থানীয় বিধায়ক তোফাজ্জল হোসেন। কিন্তু বিধায়ক মশাই এটা ভুলে গেছেন রাজ্যের বহু মুমূর্ষ রোগী এবং দুর্বল পরিবারের শিক্ষা ক্ষেত্রে পাশে দাঁড়িয়েছেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক এবং মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। এর উদাহরণ রাজ্যের মানুষ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো একটি খেলার মাঠের গ্যালারির জন্য দলের হয়ে দলের নেতৃত্বের একহাত নিলেন তিনি। কিন্তু বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে মানুষ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সেগুলি নিয়ে স্থানীয় বিধায়ককে কখনো মুখ খুলতে দেখা যায়নি।
এদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানালেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন দলে থেকে দলের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করা তীব্র নিন্দনীয় বিষয়। পাশাপাশি ওনার এমন দল বিরোধী মন্তব্যের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে। যা করার তা করা হবে। প্রদেশ সভাপতির এই মন্তব্যের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই প্রদেশ বিজেপির পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ প্রকাশিত করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখ ছিল, দলের সিনিয়র নেতাদের এই ধরনের প্রকাশ্যে সমালোচনা চরম শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং দলীয় আচরণ বিধির ইচ্ছাকৃত লঙ্ঘনের শামিল। একজন জনপ্রতিনিধি এবং দলের একজন দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে উনার কাছ থেকে যেকোনো অভিযোগ বা প্রশাসনিক সমস্যা জনসমক্ষে প্রকাশ না করে যথাযথ মাধ্যমে উত্থাপন করার প্রত্যাশা করা হয়। কিন্তু বিধায়কের এমন আচরণ কেবল দলের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ন করেনি, বরং দলীয় নেতৃত্বের জন্যও বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। দলীয় বিবৃতিতে আরো প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, শোকজ নোটিশ পাওয়ার পর পাঁচ দিনের মধ্যে উনাকে জবাব দিতে হবে। নাহলে দলীয়ভাবে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে বলে জানানো হয়। রবিবার এই বিবৃতি প্রকাশ করেছেন প্রদেশ বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক অমিত রক্ষিত। তবে শাসক দলের এমন বহু বিধায়ক থেকে শুরু করে নেতৃত্ব রয়েছেন যারা এখন প্রকাশ্যেই শাসক দলকে কালিমা লিপ্ত করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। এ ধরনের রাজনীতি হয়তো বিজেপি শাসিত অন্য কোন রাজ্যে রয়েছে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। শুধু তাই নয় অন্য কোন দলে রয়েছে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন দাঁড় করাচ্ছে সাধারণ নাগরিক। ইতিমধ্যে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল বিধায়কের দল বিরোধী এমন মন্তব্য। সাধারণভাবে হজম করছে না নাগরিক মহল। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সমালোচনার মুখে পড়তে পারে শাসক দল। যা অন্যতম হাসির খোরাকও হবে।

