Friday, March 29, 2024
বাড়িরাজ্যবিজেপি সহ সবকটি রাজনৈতিক দলকে তুলোধুনো করলেন সুদীপ

বিজেপি সহ সবকটি রাজনৈতিক দলকে তুলোধুনো করলেন সুদীপ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ আগস্ট : কিছু রাজনৈতিক দল লক্ষ্য কংগ্রেসের জায়গায় আসা। মানুষের স্বার্থে দেশ থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ভূমিকা নেই। সেসব রাজনৈতিক দলগুলির লক্ষ্য কংগ্রেসকে দুর্বল করা। কিন্তু কংগ্রেসের লক্ষ্য একটাই ভারতকে জোড়ে রাখা। ভারত যাতে জাতপাত এবং ভাষার নামে বিভক্ত না হয়। আর সেটাই কংগ্রেসের প্রধান দায়িত্ব এবং কর্তব্য। রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে ত্রিপুরার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত শচীন্দ্র লাল সিং মঞ্চে যোগদান সভায় সবকটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এমনটাই বললেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন।

 তিনি বলেন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করতে জানে একমাত্র কংগ্রেস। এবং এই স্বৈরাচারী শাসনের সাথে কোন বোঝাপড়া করে না একমাত্র কংগ্রেস। আর এটা গোটা দেশবাসী জানে। দেশের জনগণের স্বার্থে কথা বলছে বলে কংগ্রেসকে পিছুপা হাটাতে বিজেপি সি বি আই এবং ই ডি ব্যবহার করছে। কিন্তু কংগ্রেস পিছুপা হবে না। মানুষের নানা সমস্যা সমাধান করতে এই ফ্যাসিস্ট সুলভ সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস মাঠে আছে এবং আগামী দিনেও লড়াই করবে। কিন্তু দেখা যায় বিজেপি মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কোন রাজনৈতিক দল নিজেদের দাবি করে উপরাষ্ট্রপতি ভোট থেকে বিরত থাকে। এবং সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো যখন কংগ্রেস কর্মীরা নিগৃহীত হয় তখন দেখা যায় সেসব রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা প্রধানমন্ত্রী সাথে দফায় দফায় বৈঠক করতে। এভাবেই এদিন তৃণমূল কংগ্রেসকে আকার ইঙ্গিতে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন সুদীপ রায় বর্মন। পাশাপাশি এদিন তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বলেন যেসব কথা বলে রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে সেগুলি কি বাস্তবায়িত করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি। কারণ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড, বিনামূল্যে জল, বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার যে কথাগুলি বলা হচ্ছে সেগুলি পশ্চিমবঙ্গে সম্ভব।

 কারণ পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব আয় রয়েছে। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্যে নিজস্ব আয় মাত্র ১৩ শতাংশ। তাহলে কোথা থেকে এই টাকা জোগাড় হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সুদীপ রায় বর্মন। এদিকে আম আদমি পার্টিকে নাম না করে সুদীপ রায় বর্মন বলেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আগে দেখা যাবে ঝাড়ু নিয়ে ত্রিপুরার মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। তাদের এগুলি করা একমাত্র লক্ষ্য হলো যাতে মোদির খাতায় তাদের ছবিটা পরিষ্কার রাখা যায়। তাদের একটাই লক্ষ্য বিজেপিকে শক্তিশালী করতে কংগ্রেসকে দুর্বল করা। কিন্তু এগুলি করে কোন লাভ হবে না। আগামী তিন মাস পর কিভাবে যে ভারতীয় জনতা পার্টি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে সেটা আন্দাজ করতে পারছে না তারা। কারণ বহু নেতৃত্ব কংগ্রেসের যোগদান করতে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছে। এদিন তিনি বামফ্রন্ট এবং বিজেপির সমালোচনা করে বলেন রাজ্যের মানুষ বিজেপি সরকারকে নিয়ে স্বপ্নে বিভোর ছিল। কিন্তু দেখা গেছে চোর হাঁটাতে গিয়ে অজান্তে ডাকাত নিয়ে আসা হয়েছে। আর এটা আর বরদাস্ত করা যায় না। তাই কংগ্রেস বলতে চায় মানুষের কাছে দায়বদ্ধ দল। মানুষ এই রাজত্ব থেকে মুক্তি পেতে চাইছে। আর সেটা সম্ভব একমাত্র কংগ্রেস দল দিয়ে। তাই বেকার কৃষক, শ্রমিক, কর্মচারী সকলকে নিয়ে আরো জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে আহ্বান জানান কংগ্রেস কর্মীদের কাছে।

পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবসকে প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দেশের স্বাধীনতার দায়িত্ব যারা কাঁধে তুলে নিয়েছিল তারা হল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। হাসতে হাসতে ফাঁসির কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং পরিবার থেকে দূরে সরে কারাবরণ করেছিল দেশের স্বাধীনতার জন্য। আর যাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে কোন ভূমিকা ছিল না তারা এখন সাংঘাতিক বড় দেশপ্রেমী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। তারা স্বাধীনতার ৫২ বছর পর্যন্ত নিজেদের হেডকোয়ার্টারে জাতীয় পতাকার উত্তোলন করে নি, তারা সেসময় বলেছিল জাতীয় পতাকার নয় গেরুয়া পতাকা চায়। তারাই এখন বলছে দেশের অগ্রণী ভূমিকা নাকি তারা পালন করছে। কংগ্রেস খুশি হতো যদি হর ঘর তিরঙ্গা না বলে, হর ঘর জাতীয় পতাকা বলা হতো। কারণ তিরঙ্গা তো কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রয়েছে। কিন্তু তাদের এই শ্লোগান দিয়ে আবারো স্পষ্ট হয়ে গেছে তারা বোধহয় আজকেও সেই স্বাধীনতার দিনের মতো জাতীয় পতাকা নিয়ে বিরোধিতা করে চলেছে। এভাবেই বিজেপি সমালোচনা করেন সুদীপ রায় বর্মন।

এদিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিং -এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ। কংগ্রেসে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ২৫১৭ জন কর্মী সমর্থক কংগ্রেসের যোগদান করেছে। যোগদানকারীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে দলের স্বাগত জানান কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদিকা জারিতা লাইফ্রাং, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোপাল রায়, প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ সাহা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য