স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৮ ডিসেম্বরঃ ৯৬ রানে ব্যাট করছেন ছেলে নীতীশ কুমার রেড্ডি । আমজনতার মাঝে গ্যালারিতে বসে চোখ বন্ধ করে প্রার্থনা করছেন বাবা মুত্যালা রেড্ডি। তারই মাঝে আবার লাথান লিয়নের বলে ৫০ রানে আউট হলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এরপরই শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন জশপ্রীত বুমরাহ। তখনও সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে নীতীশ। তবে বাবার প্রার্থনা ব্যর্থ হয়নি। অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অজি বাহিনীর পাহাড় প্রমাণ রানের চাপ সামলে টেস্ট প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকালেন নীতীশ।
মেলবোর্ন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ৪৭৪ রানের বোঝায় যখন তৃতীয় দিনের শুরুতে ধুকতে শুরু করেছিল ভারত, তখনই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন বিশাখাপত্তনমের নীতীশ। প্রথম একাদশে তাঁকে রাখা নিয়ে বিশ্লেষকদের ভিন্ন মত অব্যাহত। কিন্তু বর্ডার গাভাসকর সিরিজে নিজেকে প্রমাণ করতে কোনও খামতি রাখেননি তিনি। ঋষভ পন্থ এবং রবীন্দ্র জাদেজার মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেটের পতনের পর দলকে অক্সিজেন জুগিয়ে চললেন নীতীশ। সাত উইকেট ২২১ রান থেকে স্টার্ক, কামিন্স, লিয়ন, বোলান্ডদের সামলে স্কোরবোর্ডে একশোর বেশি রান যোগ করলেন। আর ১৮১ বলে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে দলকে লড়াইয়ের মতো জায়গায় পৌঁছে দেন তিনি।
এদিন আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে হাফ সেঞ্চুরি করেই আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’ স্টাইলে সেলিব্রেট করেছিলেন নীতীশ। আর শতরানের পর ব্যাট মাটিতে সোজা করে রেখে তার উপর রাখলেন হেলমেট। তারপর উপর দিতে হাত তুলে প্রণাম করলেন। গ্যালারিতে বাবার তখন চোখে জল বাঁধ ভেঙেছে। বিদেশের মাটিতে টেস্টে ছেলের প্রথম সেঞ্চুরির সাক্ষী থাকতে পেরে আপ্লুত তিনি। নীতীশের এই লড়াকু ইনিংসের সৌজন্যেই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে রানের ব্যবধান অনেকটাই কমাতে সফল ভারত। তবে তারকা অলরাউন্ডারকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ওয়াশিংটন সুন্দর।
তবে এদিন খারাপ আলোর জন্য নির্ধারিত সময়ের খানিক আগেই খেলা শেষ হয়ে যায়। তৃতীয় দিনের শেষে ক্রিজে ১০৫ রানে অপরাজিত রেড্ডি এবং ২ রানে নটআউট মহম্মদ সিরাজ। ৯ উইকেট ৩৫৮ রান করায় আপাতত ১১৬ রানে পিছিয়ে ভারত।