স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১ নভেম্বর: ধরে রাখা ক্রিকেটারদের আনুষ্ঠানিক তালিকা অনুযায়ী, ১৮ কোটি রুপিতে মুম্বাইয়ে থেকে যাচ্ছেন বুমরাহ। গত মৌসুমের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া এবারও নেতৃত্ব দেবেন দলকে। তবে তার পারিশ্রমিক ১৬ কোটি ৩৫ লাখ রুপি। এই অলরাউন্ডারের সমান পারিশ্রমিকে মুম্বাইয়ে থাকছেন ভারতের জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সুরিয়াকুমার।মুম্বাইয়ের সফলতম অধিনায়ক ও সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রোহিত শার্মা পাচ্ছেন ১৬ কোটি ৩০ লাখ রুপি। বড় চার তারকার পাশাপাশি তরুণ তিলাক ভার্মাকে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি ধরে রেখেছে ৮ কোটি রুপিতে।যদিও বেশ কিছুদিন ধরে গুঞ্জন ছিল, মুম্বাই ছেড়ে যেতে পারেন রোহিত। গত মৌসুমে তাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে নাটকীয়ভাবে অধিনায়ক করা হয় পান্ডিয়াকে। পাঁচটি শিরোপাজয়ী অধিনায়ক তাতে অসন্তুষ্ট ছিলেন বলেও নানা খবর শোনা গিয়েছিল। তিনি চেন্নাই সুপার কিংসে যেতে পারেন বা এরকম নানা আলোচনা ছিল ভারতীয় ক্রিকেটে।
মুম্বাইয়ের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জে ছিল, বাজেটের মধ্যেই বড় তারকাদের ধরে রাখা নিশ্চিত করা। এবারের মেগা নিলামে দলগুলি সর্বোচ্চ ১২০ কোটি রুপি খরচ করতে পারবে। এর মধ্যে ধরে রাখা ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে ৭৫ কোটির বেশি খরচ করা যাবে না। মুম্বাইয়ের বড় চার তারকাকে ঘিরে আগ্রহ থাকার কথা তো সব ফ্র্যাঞ্চাইজিরই।তবে শেষ পর্যন্ত চারজনকেই রাজি করতে পেরেছে তারা। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকনিফোর খবর, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কোচ হয়ে ফেরা মাজেলা জায়াওয়ার্দেনে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজির সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের ভাবনা ছিল, চার তারকাকেই সমান পারিশ্রমিক দেওয়ার। তবে পারিশ্রমিকের ক্রম ঠিক করেছেন ওই চার ক্রিকেটার মিলেই এবং চার জনের মধ্যে সবচেয়ে কম পারিশ্রমিক নেওয়ার প্রস্তাব করেছেন রোহিত নিজেই।পরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের এক ভিডিওতে রোহিত নিজেই তা ব্যাখ্যা করেছেন।
“যেহেতু এই সংস্করণ থেকে আমি অবসর নিয়েছি (আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে), কাজেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে যারা জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করে, তাদেরই প্রাধান্য পাোয়া উচিত। আমি এমনটিই বিশ্বাস করি এবং এটা নিয়ে (চারজনের মধ্যে কম পারিশ্রমিক) আমি খুশি।”মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জন্য জন্য অবশ্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অধিনায়ক ঠিক করা এবং দলের মধ্যে বিভেদের কোনো ছোঁয়া না রাখা। পান্ডিয়াকে নাটকীয়ভাবে দলে এনে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে গত মৌসুমে প্রবল বিতর্কে ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সমর্থকদের একটি বড় অংশ পান্ডিয়াকে নেতৃত্বে মেনে নিতে পারেননি এবং ঘরের মাঠেই ম্যাচের পর ম্যাচের পর ম্যাচে দুয়ো দেওয়া হয় এই অলরাউন্ডারকে। দলে মনোমালিন্যের গুঞ্জনও ছিল। এসবের প্রভাব মাঠের পারফরম্যান্সে পড়ে এবং দশ দলের মধ্যে তলানিতে থেকে আসর শেষ করে তারা।
এবার সবকিছু মিটিয়ে ফেলতে গত ৪ অক্টোবর চার বড় তারকাসহ ম্যানেজমেন্টের কয়েকজকে নিয়ে আলোচনায় বসেন দলের কর্ণধারদের একজন আকাশ আম্বানি। সেখানে গত মৌসুমের পারফরম্যান্স ও সমস্যা-ভুলগুলো নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন সবাই। ক্রিকেটারদের কাছেও তাদের ভাবনা জানতে চাওয়া হয়।সেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চান সুরিয়াকুমার। জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়া পর মুম্বাইকেও নেতৃত্বে দেওয়ার আগ্রহের কথা জানান তিনি। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পান্ডিয়াকেই অধিনায়ক রাখতে চান তারা। স্রেফ এক মৌসুম দিয়ে পান্ডিয়াকে বিচার করতে চান না তারা। পরে সবাই এই সিদ্ধানেত একমত হয় এবং সুরিয়াকুমার খুশিমনেই মুম্বাইয়ে থেকে যাওয়ার কথা জানান।সমর্থকদের ভরসা ও ভালোবাসা ফিরিয়ে আনার প্রতিজ্ঞাও করা হয় ওই সভায়।