Monday, September 16, 2024
বাড়িখেলাসেই কান্নার পেছনের গল্প শোনালেন রোনালদো

সেই কান্নার পেছনের গল্প শোনালেন রোনালদো

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৯ আগস্ট: গত ১ জুলাই ইউরোর শেষ ষোলোর ম্যাচ ছিল সেটি। ৯০ মিনিট শেষে অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটের প্রথমার্ধের শেষ সময়ে পেনাল্টিতে গোল করতে পারেননি রোনালদো। দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন স্লোভেনিয়ার গোলকিপার ইয়ান ওবলাক। এর পরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন পর্তুগিজ অধিনায়ক। তাকে আলিঙ্গনে জড়িয়ে, পিঠ চাপড়ে সান্ত্বনা দেন সতীর্থরা।পরে নিজেকে সামলে নিয়ে টাইব্রেকারে গোল করেন রোনালদো। সেই গোলের পর দর্শকদের দিকে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে দেখা যায় তাকে। গোলকিপার দিয়োগো কস্তার অসাধারণ নৈপুণ্যে টাইব্রেকারে জিতে কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠে পর্তুগাল। কিন্তু রোনালদোর কান্নাই ছিল ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত অধ্যায়।

ম্যাচের পর অবশ্য সেটির ব্যাখ্যা ছোট্ট করে দিয়েছিলেন রোনালদো। এবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সাবেক সতীর্থ রিও ফার্ডিনান্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎকারেই সেই ঘটনার বিস্তারিত বললেন এই তারকা।

“প্রশংসা করার চেয়ে সমালোচনা করা অনেক বেশি সহজ। ক্রিস্তিয়ানোকে নিয়ে কথা বললে প্রথম পাতায় জায়গা হবে, এটিই স্বাভাবিক। কারণ, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ আমাকেই অনুসরণ করে। সেটা স্রেফ আমার সুন্দর মুখায়বের কারণে নয়, সবকিছু মিলিয়েই-গোল, ফুটবল, ট্রফি, পরিবার, জীবনাচরণ, সব কিছু মিলিয়েই। লোকে আমাকে পছন্দ করে বলেই অনুসরণ করে। সমালোচনাও এটিরই অংশ। এসব থাকবেই, সমস্যা নেই।”

“পেনাল্টি মিস করেছিলাম… ওবলাক দারুণভাবে বাঁচিয়েছিল। তবে এমন নয় যে, পেনাল্টি মিস করায় পর্তুগাল বাদ পড়ে যাবে, গোটা পৃথিবী আমার ওপর ভেঙে পড়বে, এসব কারণে কান্না করেছি। যারা আমাকে চেনে না, তারা এসব জানে না। আগের ২৭ পেনাল্টির সবকটিই গোল করার পর ওই সময়ে পেনাল্টিতে ব্যর্থ হলে নিজের ভেতরই খারাপ লাগা কাজ করে। যে মানুষগুলি খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে এসেছে, কারও সন্তান, কারও মা, কারও বান্ধবি… সেসব কারণে আমার খারাপ লেগেছে।”

এমন নয় যে আগে কখনও পেনাল্টিতে ব্যর্থ তিনি হননি। বড় মঞ্চেও ব্যর্থ হয়েছেন পেনাল্টিতে। তবে সেদিনের প্রেক্ষাপট ও মানসিক অবস্থা আরও বিশদভাবে তুলে ধরলেন ৩৯ বছর বয়সী তারকা।“আপনার কি মনে হয়, আমি পেনাল্টি মিস করায় গোটা পর্তুগলি ভেঙে পড়বে… লোকে বলবে যে ক্রিস্তিয়ানোর কারণে পর্তুগাল বাদ পড়ে গেছে… এসব কারণে কান্না করেছি? আমি তো ওসব ভাবিইনি। ইশ্বরের শপথ! আমি ব্যর্থ হয়েছিলাম, কারণ নিজের ওপর চাপ নিয়েছিলাম। ১১ বছর বয়স থেকেই সেই চাপ নিজের ওপর নিয়েছি যে, বিশ্বের সেরা ফুটবলার হতে চাই।”

“নিজের ভাবনায় আমি সবসময়ই সেরা হতে চেয়েছি এবং সেই চাপ নিজের ওপর নিয়েছি। এটার ভালো দিকও আছে, যখন সবকিছু ভালোভাবে এগোয়। কিন্তু যখন গড়বড় হয়, তখন সেটাও প্রবলভাবে অনুভূত হয়, কারণ নিজের ওপর চাপ থাকে। এমনিতে আমি এটা সামলাতে পারি, উপভোগই করি। তবে ওই পেনাল্টি মিস করার পর তাৎক্ষণিকভাবে আমার খারাপ লেগেছে নিজেকে নিয়ে, ভক্ত-সমর্থক, তাদের পরিবারের জন্য।”ইউরোর ওই কান্নার এক মাস আগে সৌদি আরবে কিংস কাপের ফাইনালে হেরেও মাঠে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। ম্যাচ শেষে ডাগআউটে বসেও ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখা গেছে আল নাস্‌র অধিনায়ককে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য