বেঙ্গালুরু, ১৪ মার্চ (হি.স.) : পিঙ্ক বলের টেস্টে ২৩৮ রানে দুরন্ত জয় ভারতের । এই জয়ের ফলে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর টেস্ট সিরিজেও শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করল ভারত। বেঙ্গালুরুতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টসে জিতে প্রথমে ব্যটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। প্রথম ইনিংসে ২৫২ রানে অলআউট হয় ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা তাদের প্রথম ইনিংসে ১০৯ রানে অলআউট হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৯ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রানে ইনিংসের সমাপ্তির ঘোষণা করে। শ্রীলঙ্কার সামনে ৪৪৭ রানের লক্ষ্য রাখে ভারত। কিন্তু শ্রীলঙ্কাকে ২০৮ রানে অল আউট করে ২৩৮ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।
রবিবার দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগেই একটি উইকেট হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ফিরে গিয়েছিলেন লাহিরু থিরিমান্নে। তৃতীয় দিন ভারতের জেতার জন্য দরকার ছিল ৯ উইকেট। আপামর ক্রিকেটজনতা ভাবছিলেন, ভারতের আগুনে বোলিংয়ের সামনে কতক্ষণ এই শ্রীলঙ্কা টিকবে? প্রথম ইনিংসে তাদের ব্যাটিংয়ের খোলনলচে বেরিয়েই পড়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে সম্ভাবনা ছিল আরও খারাপ হওয়ার।
শ্রীলঙ্কা হারল ঠিকই, কিন্তু লড়াই দিয়েই। ধারে-ভারে তারা ভারতের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে নেমেছিল। কিন্তু হার-না-মানা মনোভাব নিয়ে নেমেছিলেন দু’জন। অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে এবং কুশল মেন্ডিস। সোমবার প্রথম এক ঘণ্টা ভারতের পেসারদের অনায়াসে সামলে দিলেন তাঁরা। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি বা রবিচন্দ্রন অশ্বিন দাঁত ফোটাতে পারছিলেন না।
জুটি ভাঙলেন সেই অশ্বিনই। অর্ধশতরান পূরণের পর সাহসী হয়ে অশ্বিনকে এগিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন কুশল। উইকেটের পিছনে ঋষভ অনায়াসেই স্টাম্প করে দেন। একটা উইকেট পড়লেই যে শ্রীলঙ্কা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে, এটা জানাই ছিল। হলও সেটাই। এক দিকে ক্রিজ কামড়ে পড়েছিলেন করুণারত্নে। কিন্তু অসহায় ভাবে উল্টো দিক থেকে একের পর এক উইকেটের পতন দেখলেন। যাঁরাই আসছিলেন, সাময়িক প্রতিরোধ গড়ছিলেন বটে। কিন্তু করুণারত্নের পাশে দাঁড়িয়ে লম্বা সময় ধরে ইনিংস খেলার মতো ব্যাটার এই শ্রীলঙ্কা দলে কেউ নেই। নিরোশন ডিকওয়েলা বা চরিত অসলঙ্ক সামান্য প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি।
করুণারত্নে আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। যে পিচে শ্রীলঙ্কার কোনও ব্যাটার দাঁড়াতে পারেননি, সেখানে ভারতের ভয়ঙ্কর বোলিং লাইন-আপের বিরুদ্ধে শতরান করলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধৈর্য হারালেন তিনিও। করুণারত্নে ফেরার পর তিনটি উইকেট পড়তে বেশি সময় লাগেনি।
ফলে ভারত দু’টি টেস্টেই জয় পেল। কাকতালীয় হলেও দু’টেস্টই তিন দিনের কম সময়ে খেলা শেষ করে দিল ভারত। মোহালির পর বেঙ্গালুরুর পিঙ্ক বল টেস্টেও অসাধারণ জয় ছিনিয়ে নিল রোহিত শর্মা ব্রিগেড। ম্যাচের সেরা হলেন শ্রেয়স আইয়ার। সিরিজের সেরা হলেন ঋষভ পন্ত। অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট অভিষেক হওয়ার পরেই দু’ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ জয় রোহিত শর্মার বড় প্রাপ্তি।