স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৯ জানুয়ারি: ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস প্রশংসাপত্র দেওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জনটা উঠেছে। উপমহাদেশের মাটিতে এটাই কি ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের খেলা সেরা ইনিংস? প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া কঠিন। সেই ১৯৩৩ সাল থেকে ভারত সফর করছে ইংল্যান্ড দল। স্টোকস অবশ্য অত হিসাব-নিকাশের ধার ধারেননি। নিজের সময় বিচার করেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। আর সে সময় বিচারে স্টোকসের কাছে পোপের ১৯৬ রানের ইনিংসটি ‘উপমহাদেশের মাটিতে কোনো ইংলিশ ব্যাটসম্যানের খেলা সেরা ইনিংস।’ শুধু স্টোকস কেন, পোপ এই ইনিংস খেলার পথে যেভাবে ব্যাট করেছেন, সেটা দেখেই তাঁর সঙ্গে হাত মেলাতে চান ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড়।হায়দরাবাদের টেস্টের ফল এতক্ষণে সবার জানা। প্রথম ইনিংসে ১৯০ রানে পিছিয়ে থেকেও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের এক গল্প লিখে ভারতকে ২৮ রানে হারিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। আর সেখানে পোপের ১৯৬ রানের ইনিংসটির অবদান অসামান্য।
পিছিয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত ভারতকে ইংল্যান্ড জয়ের জন্য ২৩১ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছেও ওই ইনিংসটির কল্যাণে। পরে টম হার্টলির (৭/৬২) বোলিংয়ে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে দ্রাবিড় বলেছেন, ইংল্যান্ডের জয়ে চাবিকাঠি ছিল ভারতের বিশ্বমানের স্পিনারদের বিপক্ষে প্রতি–আক্রমণ এবং রিভার্স সুইপে খেলা ওলি পোপের ইনিংসটি।রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেল ও রবীন্দ্র জাদেজা—ভারতের এই তিন স্পিনারের বিপক্ষে নিয়মিতই রিভার্স সুইপ খেলেছেন পোপ। রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের উইকেট যে ব্যাটিংয়ের জন্য খুব সহায়ক ছিল, সেটাও না। কিন্তু দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসে ভর করে ঝুঁকি নিয়ে সফল হন পোপ। দ্রাবিড় তাই বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই এত ধারাবাহিকভাবে (রিভার্স সুইপ) এটি করতে দেখিনি।’ ভারতের কিংবদন্তি যোগ করেন, ‘সুইপ এমন একটি শট, যেটি আমরা অতীতে খেলতে দেখেছি। কিন্তু এতটা সময় ধরে এতটা ধারাবাহিকভাবে রিভার্স সুইপ খেলা—তাকে টুপিখোলা ধন্যবাদ দিতেই হবে। আমি শুধু তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলতে চাই, অবিশ্বাস্য রকম ভালো খেলেছ। অন্য রকম ইনিংস।’
দ্রাবিড় আশা করেছিলেন, পোপ রিভার্স সুইপে বোলারদের লাইন-লেংথ এলোমেলো করতে চাইলেও অশ্বিন-জাদেজারা মানিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু সেটি শেষ পর্যন্ত হয়নি। তাই বলে স্পিনারদের ওপর ভরসা হারাচ্ছেন না ভারতের কোচ, ‘আমাদের স্পিনারদের একটি ভালো ব্যাপার হলো, তারা সব সময় ঘুরে দাঁড়ায়।’ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্টোকসও পোপের ইনিংসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, ‘উপমহাদেশে অনেক টেস্ট ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য হয়েছে। জো রুটেরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তার কাছ থেকে দারুণ কিছু ইনিংস দেখেছি। কিন্তু (এবার) যে পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম, তিনে ব্যাটিংয়ে নেমে, ওভাবে শট খেলে ১৯০ রান (১৯৬) করা, সেটাও কঠিন উইকেটে।’ স্টোকস এরপর সরাসরি বলেছেন, ‘সে সুইপ ও রিভার্স সুইপের মাধ্যমে ফিল্ডিং সাজানোর ওপর প্রভাব রেখেছে। আমার মতে উপমহাদেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের খেলা এটাই সেরা ইনিংস।’