স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ জানুয়ারি: লা লিগায় এই মৌসুমে ২০ ম্যাচ খেলেও জয়ের স্বাদ না পাওয়া আলমেরিয়া দারুণ এক জয়ের সম্ভাবনা জাগায় ২১তম ম্যাচে। রেয়ালের মাঠে তারা প্রথমার্ধে এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সেই গোল দুটি শোধ করে যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে আরেকটি গোল করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রেয়াল মাদ্রিদ।বিতর্ক, নাটক বা আলোচিত ঘটনার সবকিছুই এই দ্বিতীয়ার্ধে। রেয়াল প্রথম গোলটি করে পেনাল্টি থেকে। ডি-বক্সে আলমেরিয়ার ডিফেন্ডার কাইকি ফের্নান্দেসের হাতে বল লাগলে ভিএআর মনিটরে রিপ্লে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে আলমেরিয়ার দাবি, বল হাতে লাগার আগেই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে ফাউল করেছিলেন রেয়ালের হোসেলু।চার মিনিট পর রেয়ালের জালে বল পাঠান আলমেরিয়ার সের্হিও আরিবাস। কিন্তু লম্বা সময় ভিএআর মনিটরে চোখ রেখে গোল দেননি রেফারি। রেফারির মতে, আক্রমণের শুরুতে জুড বেলিংহ্যামকে ফাউল করেছিলেন আলমেরিয়ার দিয়োন লুপি।৬৭তম মিনিটে রেয়ালকে সমতায় ফেরান ভিনিসিউস জুনিয়র। হ্যান্ডবলের কারণে শুরুতে সেটি গোল দেননি রেফারি। পরে ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টে গোল বৈধ বলে রায় দেন তিনি। এই সিদ্ধান্তে মাঠেই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ দেখা যায় আলমেরিয়ার কোচ ও ফুটবলারদের। ধারাভাষ্যকাররা বিস্মিত হন রেফারির সিদ্ধান্তে।
রেয়ালের হয়ে আরেক দফায় বল জালে পাঠিয়েছিলেন বেলিংহ্যাম। তবে অফসাইডের জন্য সেই গোল পায়নি রেয়াল। বিতর্কের অবকাশ আছে এই সিদ্ধান্তেও।যোগ করা সময়ে লাল কার্ড দেখানো হয় আলমেরিয়া কোচ গাইসকা গারিতানোকে। এর কিছুক্ষণ পর বেলিংহ্যামের দারুণ হেডে বল পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে গোল করে কারভাহাল।আলমেরিয়ার দ্বিতীয় গোলটি করেছেন যিনি, সেই এদগার গনসালেস ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমকে বললেন, রেফারির সিদ্ধান্তে ন্যায্যতা খুঁজে পাননি তিনি।“এই প্রতিযোগিতা তো সবার জন্যই সমান হওয়া উচিত। কিন্তু কখনও কখনও তা খুঁজে পাওয়াই কঠিন। (রেয়ালের) পেনাল্টিতে পরিষ্কার ফাউল হয়েছিল, ওদের দ্বিতীয় গোলটিতেও আমার মতে, হ্যান্ডবল ছিল। সব সিদ্ধান্তই তাদের পক্ষে গেছে।”আলমেরিয়ার ডিফেন্ডার মার্ক পুবিল তো সরাসরিই আঙুল তুললেন রেফারির দিকে, “কেউ একজন (রেফারি) সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে আজকে আমাদের জিততে দেবে না এবং সেটিই হলো।
”ম্যাচের পর প্রতিক্রিয়ায় সবটুকু ক্ষোভ উগড়ে দেন আলমেরিয়ার মিডফিল্ডার গনসালো মেলেরো।“আজকে আমাদের সঙ্গে স্রেফ ডাকাতি করা হয়েছে। এটা বলতে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু অন্য কোনোভাবে এটাকে দেখার উপায় নেই।”“এ বছর এটিই প্রথমবার আমাদের সঙ্গে এরকম হলো না। আগেও অনেকবার হয়েছে। অভিযোগ না করলে তারা (রেফারি) এসবকে আমলে নেয় না। এভাবেই চলছে। আমরা কখনোই এসব নিয়ে কিছু বলি না। তবে আজকে যা হলো, তা সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এটা অবিশ্বাস্য। ওদেরকে ম্যাচ জেতানোর জন্য এর চেয়ে বেশি আর কিছু করার ছিল না…।”মেলেরোর এই মন্তব্য শুনে পরে জবাব দিলেন শেষ সময়ের গোলে রেয়ালকে জয় এনে দেওয়া কারভাহাল।“একটু শান্ত হওয়ার পর যদি মেলেরো আবার ভিডিও দেখে, তাহলে সে নিশ্চিতভাবেই উপলব্ধি করবে যে, রেফারির সিদ্ধান্তগুলো সঠিকই ছিল।”
কারভাহালের কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল রেয়াল কোচ আনচেলত্তির কণ্ঠে।“ওই সিদ্ধান্তগুলো তো ভিএআর রিভিউ দেখে নেওয়া হয়েছে, তিনটি সিদ্ধান্তই স্বাভাবিক ছিল। আমার মনে হয়, সঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। সবারই নিজস্ব মতামত আছে। আমি যা দেখেছি, সেটাই বলছি।”“আলমেরিয়া খুব ভালো খেলেছে, তাদের রাগের কারণ আমি বুঝতে পারছি। তবে তিনটি সিদ্ধান্তই যদি আবার দেখেন, সবগুলিই সঠিক ছিল। ভিএরআরের কারণে জিতেছি, এটা শুনতে আমি তৈরি আছি। তবে সবগুলি ভিডিও আবার দেখেছি। আমার মতে, রেফারি ঠিক ছিলেন। ভিএআর তো সিদ্ধান্ত নেয় না। ভিএআর সুপারিশ করে, রেফারি সিদ্ধান্ত নেন। আমার মনে হয়, তিনি সঠিক ছিলেন।”এই জয়ের পর ২০ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগার পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে আছে রেয়াল। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৫২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে এই মৌসুমে চমক জিরোনা।