স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২৬ জুন: ২০ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর প্রবল সম্ভাবনা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত এবারে পারেনি আর্সেনাল। প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটির পেছনে থেকে রানার্স আপ হয় তারা।মৌসুম শেষে আর্তেতা এখন ছুটি কাটাচ্ছেন স্পেনের মায়োর্কায় নিজ বাড়িতে। স্ত্রী, তিন সন্তান, বাবা-মা ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটছে তার সেখানে। বাচ্চাদের সঙ্গে বাড়ির আঙিনায় ফুটবল খেলছেন। আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলির কয়েকটিতে চোখ রেখেছিলেন টিভি পর্দায়। এছাড়া আর ফুটবলের আর কোনো ব্যস্ততা এখন নেই।তবে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরে তাকালেন খানিকটা পেছনে। অনেক বছর পর এবার সত্যিকার অর্থেই শিরোপার লড়াইয়ে ছিল আর্সেনাল। তবে এটুকুতে সন্তুষ্ট নন আর্তেতা। সম্ভাবনা জাগিয়েও না পাওয়ার বেদনা এখনও তিনি অনুভব করছেন হৃদয়ের গভীরে।“কৃতিত্ব হতো যদি জিততে পারতাম। এটা আর্সেনাল এবং এখানে চাওয়াটা সবসময়ই অনেক উঁচু। ১০ মাস সিটির সঙ্গে লড়াইয়ের পরও প্রিমিয়ার লিগ জিততে না পারা এখনও আমাকে কষ্ট দিচ্ছে।”
“তবে খেলার ধরনই এরকম। আক্ষেপ থাকলেও এতটা তরুণ দল নিয়ে (লিগের সবচেয়ে কম বয়সী স্কোয়াড ছিল আর্সেনালের) আমরা যা অর্জন করেছি, সেটাও কম নয়। এটা আমার কাছে পরিষ্কার।” লিভারপুল, ওয়েস্ট হ্যাম ও সাউথ্যাম্পটনের বিপক্ষে টানা তিনটি ড্র, দলের চোটের থাবা আর ম্যানচেস্টার সিটির দুর্দান্ত ফর্ম, সব মিলিয়েই শেষ দিকে আর্সেনাল আর পেরে ওঠেনি বলে মনে করেন আর্তেতা।“টানা ওই তিনটি ড্রয়ের শাস্তি পেতে হয়েছে আমাদের। কিছুটা দুর্ভাগ্যের ব্যাপারও ছিল (দুই ম্যাচে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও ড্র করা)। তিন-চারজন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারের চোটও বড় বাধা হয়ে এসেছি। সেখান থেকে সবকিছু জটিল হতে শুরু করে। পুরো দলকে যখনই পেয়েছি, আমরা ধারাবাহিক ছিলাম। সমস্যাগুলো আসতেই আমরা নিজেদের ধরে রাখতে পারিনি।”“এছাড়া আমাদের প্রতিপক্ষের (ম্যান সিটি) কথাও বলতে হবে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দল তারা, বিশ্বের সেরা স্কোয়াড তাদের, বিশ্বের সেরা কোচও তাদের… আমাদের তাই মেনে নেওয়া এবং তাদের সঙ্গে হাত মেলানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।”ম্যানচেস্টার সিটিতেই একসময় পেপ গুয়ার্দিওলার সহকারী ছিলেন আর্তেতা। গুয়ার্দিওলাই যে বিশ্বের সেরা কোচ, এটা অকপটেই বললেন আর্সেনাল কোচ। “কোনো সংশয় নেই… সে সবকিছুতেই সেরা। ম্যানেজমেন্টে সেরা, নিজের পরিকল্পনা সবাইকে বোঝানো, এক সুতোয় গাঁথা, দলের সেরাটা বের করে আনা, ম্যাচের আগে ও ম্যাচের সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বার্তাটা ধরে রাখা… সব মিলিয়েই পেপ জিনিয়াস।”ম্যানচেস্টার সিটিতে তিন বছর সহকারী কোচের কাজ করার পর ২০১৯ সালে আর্সেনালের দায়িত্ব নেন আর্তেতা। পথ হারিয়ে ব্যর্থতার চক্রে থাকা দলকে এখন যে জায়গায় নিয়ে এসেছেন তিনি, তাতে সন্তুষ্টিই খুঁজে পাচ্ছেন ৪১ বছর বয়সী এই কোচ।“সবকিছুর শুরু ছিল তিন বছর আগে। সিটিতে পেপ গুয়ার্দিওলার সহকারী ছিলাম আমি। আর্সেনালের বিপক্ষে একটি ম্যাচে আমরা খেলছিলাম এবং খেয়াল করলাম, ক্লাবটি তাদের সত্ত্বা হারিয়ে ফেলেছে। এটা তারা উপভোগ করছিল না, অনুভব করছিল না। অল্প কদিন পরই তাদের দায়িত্ব নিয়ে আমি জানতাম, এখানে সুযোগটা আছে এবং এই ক্লাব এত বড় যে, সমর্থকদের সঙ্গে দলের সংযোগ দৃঢ় করতে হবে।”“কাজটি সহজ ছিল না… তবে এখন আমি খুশি। এখন আমাদের পরিষ্কার পরিচয় আছে, সম্পৃক্ততা আছে এবং আমরা এখন প্রাণশক্তিতে ভরপুর। এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। শীর্ষ থেকে নিচু পর্যায় পর্যন্ত একই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সবাই। সমর্থকদের স্বপ্ন দেখার ও গর্ব করার উপলক্ষ এনে দিয়েছি আমরা। এখন আরও অর্জনের পালা।”