স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৬ জুন: প্রতিযোগিতাটির তৃতীয় আসরের চার দলের এবারের ফাইনালসটি হচ্ছে নেদারল্যান্ডসে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ২-১ গোলে জিতে শিরোপা লড়াইয়ে জায়গা করে নিল স্প্যানিশরা।ইয়েরিমো পিনোর গোলে শুরুতে লুইস দে লা ফুয়েন্তে দল এগিয়ে যাওয়ার খানিক পরই সমতা টানেন চিরো ইম্মোবিলে। তবে প্রতিপক্ষের টানা আক্রমণের মুখে মাঠে কখনই আধিপত্য করতে পারেনি ইতালি। তারপরও অনেকটা সময় প্রতিপক্ষকে আটকে রাখতে পারে তারা। শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দেন হোসেলু।২০২১ সালের অক্টোবরে সেমি-ফাইনালেই স্পেনের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছিল ইতালি। সেবারও তারা হেরেছিল ২-১ গোলে।ইতালির বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে যে কোনো দলের ভাবনাতেই বড় জায়গা জুড়ে থাকে তাদের রক্ষণের দৃঢ়তা। তবে এদিন শুরুতে ওই রক্ষণেই গড়বড় করে ফেলে দলটি।দায় প্রায় পুরোটাই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক লিওনার্দো বোনুচ্চির। গোলরক্ষকের পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে একটু বেশিই দেরি করে ফেললেন তিনি, সেই সুযোগে ছুটে গিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ইয়েরিমো পিনো। এরপর ভিয়ারিয়াল মিডফিল্ডার নিখুঁত কোনাকুনি শটে দলকে এনে দেন আনন্দের উপলক্ষ।
পাল্টা জবাব দিতে অবশ্য দেরি করেনি ইতালি। একাদশ মিনিটে সফল স্পট কিকে সমতা টানেন লাৎসিও ফরোয়ার্ড ইম্মোবিলে। ডি-বক্সে ফ্রান্সে জন্ম নেওয়া স্প্যানিশ ডিফেন্ডার লি নমোঁর হাতে বল লাগলে পেনাল্টিটি পায় ইতালি।২১তম মিনিটে সতীর্থের থ্রু বল দারুণ নৈপুণ্যে দাভিদে ফ্রাত্তেসি জালে পাঠালে এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে ফেটে পড়ে ইতালিয়ান সমর্থকরা। তবে ভিএআরের সাহায্যে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি।প্রথমার্ধে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করা স্পেন ৪৮তম মিনিটে মুহূর্তের ব্যবধানে নিশ্চিত দুটি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমে মিকেল মোরিনোর ভলি কোনোমতে এক হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। আলগা বল গোলমুখে পেয়ে যান মোরাতা; কিন্তু তার শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।চার মিনিট পর আবারও ইতালির বক্সে ভীতি ছড়ায় স্পেন। এবার বক্সে রদ্রি বল প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কিছুটা ওভারহেড কিকের মতো করে চেষ্টা করেন, বল ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে চলে যায়।প্রতিপক্ষের একের পর এক আক্রমণ সামলে নিজেদের সীমানা থেকে বের হতেই পারছিল না ইতালি। ৬৫তম মিনিটে তারাই দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যেতে পারতো। বাঁ থেকে সতীর্থের বক্সে বাড়ানো পাস পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শট নেন ফ্রাত্তেসি, দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
প্রবল চাপ ধরে রেখে ৮৮তম মিনিটে জয়সূচক গোলের দেখা পায় স্পেন। ভাগ্যকেও পাশে পায় তারা।তাদের পাসিং ফুটবলে শানানো আক্রমণ প্রথম দফায় ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় ইতালি। ফিরতি বল ডি-বক্সের বাইরে পেয়ে জোরাল শট নেন রদ্রি। বক্সে বল প্রতিপক্ষে দুজনের গায়ে লেগে চলে আসে গোলমুখে হোসেলুর কাছে। দোন্নারুম্মাকে কোনো সুযোগ না দিয়ে বল বাতাসে থাকা অবস্থায় টোকায় বাকি কাজ সারেন দুই মিনিট আগেই মোরাতার বদলি নামা হোসেলু। গত আসরে ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল স্পেনকে। এরপর গত বছরের শেষ দিকে কাতার বিশ্বকাপে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে পড়ার হতাশা হয় সঙ্গী।এবার দলটির সামনে সেসব হতাশা ঝেড়ে ফেলে শিরোপা উল্লাসে ভাসার সুযোগ। সেই লক্ষ্যে আগামী রোববার ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে আলবা-মোরাতারা।