স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১২ জুন: প্রায় দুই মাস ধরে আইপিএল খেলার পর এবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে আসে ভারত। ভারতের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটোছুটি করে দীর্ঘ ওই টুর্নামেন্ট খেলার শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি-শ্রান্তি কাটিয়ে ওঠার পর্যাপ্ত সময় তাই ছিল না নিশ্চিতভাবেই। টি-টোয়েন্টি থেকে টেস্টে মানিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট সময়-সুযোগও ছিল কি না, সংশয় তা নিয়েও। বিশেষ করে ম্যাচটি যখন খেলতে হচ্ছে বিরুদ্ধ কন্ডিশনে। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২০৯ রানে হেরে যায় ভারত। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গত চক্রেও একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাদের। আইপিএলের পরপর টেস্টের ফাইনাল খেলতে নেমে সেবার বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ভারত ৮ উইকেটে হেরে যায় নিউ জিল্যান্ডের কাছে। জুন মাসেই ইংল্যান্ডের আরেক ভেন্যু সাউথ্যাম্পটনে হয়েছিল ম্যাচটি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগামী চক্রের ফাইনাল হবে ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক মাঠ লর্ডসে এবং ২০২৫ সালের জুন মাসেই। আইপিএল সাধারণত হয়ে থাকে মার্চ থেকে মে মাসে। আইপিএলের পরপর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার চ্যালেঞ্জ তাই ভারতের জন্য থাকবে সবসময়ই। এবারের ফাইনালের পর এই প্রশ্ন উঠতেই রোহিত উত্তর দিলেন কিছু প্রশ্ন দিয়েই।
“কেন আইপিএল ফাইনালের পরই হতে হবে (টেস্টের ফাইনাল)? কেন মার্চে হতে পারবে না! একমাত্র জুন মাসেই নিশ্চয়ই আমরা ফাইনাল খেলতে পারি না! এটা তো বছরের যে কোনো সময়েই হতে পারে এবং বিশ্বের যে কোনো জায়গায় হতে পারে, শুধু ইংল্যান্ডে নয়।” আইসিসির মহাব্যবস্থাপক ওয়াসিম খান অবশ্য এবারের ফাইনালের আগেই বলেছেন, দুই বছর ধরে চলা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সূচিই এমনভাবে করা হয় যেন জুন মাসের দিকে গিয়েই ফাইনাল ম্যাচটি পড়ে এবং ওই সময়টায় উত্তর গোলার্ধেই গ্রীষ্ম থাকে। ফাইনালের জন্য তাই ইংল্যান্ডের কোনো ভেন্যুই উপযুক্ত। জুন মাস থেকে ফাইনাল সরাতে হলে এখন গোটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সূচিই ওলট-পালট করতে হবে। এছাড়াও অন্য সময়ে ও ইংল্যান্ডের বাইরে কোথাও এই ফাইনাল আয়োজনে বড় বাধা ফাঁকা সময় পাওয়াও। একের পর এক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের আবির্ভাব ও দাপটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য যথেষ্ট ফাঁকা সময় পাওয়াই এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ। শুধু ফাইনালের সময় বা ভেন্যু নয়, রোহিত মতামত দিলেন পরিধি নিয়েও। গত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারার পর বিরাট কোহলি বলেছিলেন, এমন একটি আসরের ফাইনাল হওয়া উচিত তিন ম্যাচের সিরিজ দিয়ে। এবারের ফাইনাল শুরুর আগে একই মত দেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার।
এবার তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন রোহিত। যদিও পারিপার্শ্বিক বাস্তবতাও তুলে ধরলেন তিনি। “আমার তো খুবই ভালো লাগবে তা (তিন ম্যাচের ফাইনাল)। কিন্তু অত সময় কোথায়? এটা বড় প্রশ্ন। তবে সত্যি বলতে, এরকম একটি বড় আসরের ফাইনালে দুই দলকেই পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া উচিত।” “তিন ম্যাচের একটি সিরিজ তাই দারুণ হবে। তবে ফাঁকা সময় বের করার ব্যাপার আছে, কোথায় এটির জায়গা দেওয়া হবে…। তবে এরকম একটি আসরে দুই বছর ধরে কঠোর পরিশ্রমের পর কেবল একটিই সুযোগ মেলে (শিরোপার)… টেস্ট ক্রিকেটের জন্য প্রয়োজনীয় মোমেন্টাম এতে মেলে না। টেস্ট ক্রিকেটের ব্যাপারটিই হলো ছন্দ ও মোমেন্টাম খুঁজে পাওয়া। পরের চক্রে তাই সম্ভব হলে তিন ম্যাচের ফাইনাল হবে আদর্শ।” শিরোপাজয়ী অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স অবশ্য ফাইনালে তিন ম্যাচের সিরিজ খুব জরুরি বলে মনে করেন না। “আমার মনে হয়, এটা ঠিকই আছে। কোনো সংশয় নেই। দেখুন, এভাবে ভাবলে তো ৫০ ম্যাচের সিরিজ হবে আদর্শ! তবে অলিম্পিকের মতো আসরে একটি লড়াইয়েই সোনার পদক জিততে হয়। এএফএল (অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল লিগ), এনআরএল (ন্যাশনাল রাগবি লিগ), এসব আসরেও মৌসুমের ফাইনাল থাকে। খেলাধুলার ব্যাপারটিই এমন।”