স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১০ জুন: ইংলিশ ফুটবলে মাঝারি মানের ক্লাব থেকে বড় শক্তি হয়ে ওঠার পথে ম্যানচেস্টার সিটির ছোটা শুরু ২০০৮ সালে মালিকানা বদলের পর। তখনও পর্যন্ত ক্লাবের সুদীর্ঘ ইতিহাসের ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে স্রেফ দুটি শিরোপা ছিল তাদের। কিন্তু তিন মৌসুমের মধ্যেই দুবার লিগ জিতে যায় তারা ২০১১-১২ ও ২০১৩-১৪ মৌসুমে। ২০১৬ সালে গুয়ার্দিওলা কোচ হয়ে আসার পর ক্রমে এই ক্লাব হয়ে ওঠে ইংলিশ ফুটবলে প্রবল প্রতাপশালী। এবার হ্যাটট্রিক শিরোপাসহ সবশেষ ৬ মৌসুমে ৫ বার প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছে তারা।কিন্তু দলবদলের বাজারে কাড়ি কাড়ি ডলার ঢেলেও এখনও পর্যন্ত ইউরোপ সেরা হতে পারেনি তারা। বহুকাঙ্ক্ষিত সেই শিরোপা জয়ের আরেকটি সুযোগ এবার। ইস্তানবুলের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান।এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনেও গুয়ার্দিওলার কণ্ঠে ফুটে উঠল কতটা উদগ্রীব তারা, এই ট্রফির জন্য কতটা আকুতি তাদের।“এটা একটা স্বপ্ন, অবশ্যই… হতেই হবে। কোনো কিছু অর্জনের জন্য উপযুক্ত পর্যায়ের ঘোরের মধ্যে থাকতে হবে বা যথেষ্ট তাড়না থাকতে হবে। এটি করে দেখানোর ইচ্ছা কতটা, তা বোঝাতে ‘আচ্ছন্ন’ শব্দটিই হয়তো সবচেয়ে ইতিবাচক। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই এটি একটি স্বপ্ন।”সিটি প্রথম শিরোপার অপেক্ষায় থাকলেও ইন্টার মাঠে নামবে চতুর্থবার ইউরোপ সেরা হওয়ার লড়াইয়ে। ইতিহাস তাই ইতালিয়ান ক্লাবটির পক্ষে। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও শক্তির বিচারে ফাইনালে পরিষ্কার ফেভারিট সিটিই।
যদিও ম্যাচের আগের নানা সমীকরণকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না গুয়ার্দিওলা। তার সবটুকু মনোযোগ ফাইনাল জয়ের দিকেই।“এই প্রতিযোগিতায় ইতিহাসের দিক থেকে ইন্টার মিলান আমাদের চেয়ে এগিয়ে। আবার, এই ম্যাচে আমরাই ফেভারিট। তবে যেটা গুরুত্বপূর্ণ হলো, ইস্তানবুল সময় রাত ১০টায় আমাদের যতটা সম্ভব সেরা পারফরম্যান্স দেখানো এবং পার্থক্য গড়া।”“আমরা কেবল জানি, এটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লোকের মতামত তো আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। আমার মনোযোগ থাকে স্রেফ আমাদের করণীয় কতুটুকু। ইন্টার খেলা আমি দেখেছি এবং আমরা আমাদের মতো খেলার চেষ্টা করব। একটি ম্যাচেই সবকিছুর অবসান হবে এবং ৯৫ মিনিট ধরে যে দল ভালো খেলবে, তারাই জিতবে।”
এমনিতে কোনো ইতালিয়ান দলের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রতিপক্ষের মূল চ্যালেঞ্জ থাকে আঁটসাঁট রক্ষণভাগে ফাটল ধরানো। সিটির সামনেও সেই পরীক্ষা থাকবে। তবে গুয়ার্দিওলা ভালো করেই জানেন, ইন্টার স্রেফ রক্ষণ নিয়েই ব্যস্ত থাকবে না।“ইন্টার এমন এক দল, যারা স্রেফ রক্ষণ সামলায় না। এরকম একটি ধারণা আছে যে, ইতালিয়ান দলগুলি কেবল রক্ষণ সামলাতে জানে। তবে ইন্টার আরও অনেক কিছুই ভালো করতে পারে।”“বিপজ্জনক সব ফুটবলার আছে তাদের সব পজিশনেই। বল পায়ে রাখতে এবং নিখুঁতভাবে কাজ শেষ করতে জানে ইন্টার। সেন্টার থেকে ও ফ্লাঙ্ক থেকে আক্রমণ করতে জানে তারা। ওপর থেকে এবং নিচ থেকে, সব জায়গাতেই যতটা সম্ভব ভালোভাবে রক্ষণের চেষ্টা করব আমরা।”ইন্টারের রক্ষণে হুমকি হয়ে উঠতে পারেন যিনি, সেই আর্লিং হলান্ড সবশেষ কিছু ম্যাচে খানিকটা নিষ্প্রভ। ম্যানচেস্টার সিটিতে প্রথম মৌসুমেই অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা তার। ৫২ গোল করে ফেলেছেন এর মধ্যেই। কিন্তু গত কয়েকটি ম্যাচে নিজের সেরা চেহারায় ছিলেন না তিনি।তবে তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ দেখেন না গুয়ার্দিওলা। ফাইনালে এই ফরোয়ার্ডই কোচের বাজি।“আর্লিং হলান্ডের গোল স্কোরিংয়ের গড় নিয়ে কথা বলতে আসিনি আমি। আপনার যদি মনে হলান্ডের গোল স্কোরিংয়ের সামর্থ্য নিয়ে সংশয় থাকে, তাহলে সম্ভবত আপনি সঙ্গী কাউকে পাবেন না। আগামীকাল সে প্রস্তুত থাকবে আমাদেরকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল জেতাতে।”