Saturday, February 8, 2025
বাড়িখেলা১৯৩৮ বিশ্বকাপ: ইতালির ‘দ্বিতীয়’

১৯৩৮ বিশ্বকাপ: ইতালির ‘দ্বিতীয়’

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৯ নভেম্বর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে ১৯৩৮ সালের ৪ থেকে ১৯ জুন ফ্রান্সে হয় ফুটবল বিশ্বকাপের তৃতীয় আসর। শিরোপা ধরে রাখে ইতালি। পরপর দুই আসর ইউরোপে আয়োজন করায় ক্ষুব্ধ হয়ে অংশ নেয়নি লাতিন আমেরিকার দুই দেশ উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ যার স্বপ্নের ফল, সেই জুলে রিমের দেশ ফ্রান্সে বিশ্বকাপের আয়োজন; টানটান উত্তেজনার এই আসরে শুরুতে অংশগ্রহণকারী দেশ ছিল ১৬টি। কিন্তু মাঠের লড়াই শুরুর আগেই জার্মানি দখলে নেয় আস্ট্রিয়া। অস্ট্রিয়ার তৎকালীন সেরা খেলোয়াড়দের জার্মানির হয়ে খেলার প্রস্তাব দিলে তা লুফে নেন অনেকেই, কিন্তু এই প্রস্তাব টলাতে পারেনি সেসময়কার সুপারস্টার মাতোয়াস সিইন্দলকে।অস্ট্রিয়া সরে যাওয়ায় মূলপর্বে অংশগ্রহণকারী দল দাঁড়ায় ১৫টি। এর মধ্যে ইউরোপের দেশ ১২টি (জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, হাঙ্গেরি, চেকোস্লোভাকিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, রোমানিয়া, বেলজিয়াম ও পোল্যান্ড)।লাতিন আমেরিকা থেকে কেবল ব্রাজিল অংশ নেয়। উত্তর আমেরিকার প্রতিনিধি হয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলে কিউবা। এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্ব আসরে খেলে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া (বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া)।  

প্রথম পর্ব 

দ্বিতীয় বিশ্বকাপের পথ অনুসরণ করে নকআউট ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় বিশ্বকাপ। অস্ট্রিয়ার অবর্তমানে এই বিশ্বকাপে প্রথম দেখা মেলে ‘ওয়াকওভারের।’ এতে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার-ফাইনালে সরাসরি জায়গা করে নেয় সুইডেন।বাকি থাকা সাত ম্যাচের পাঁচটি গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এর দুটি সমতায় শেষ হওয়ায় গড়ায় রিপ্লে ম্যাচে।নির্ধারিত সময়ে নিষ্পত্তি হওয়া ম্যাচে ফল ছিল এমন: ফ্রান্স-বেলজিয়াম (৩-১) ও হাঙ্গেরি-ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া (৬-০)। রিপ্লেতে যাওয়ার পর দুটি ম্যাচে ফল ছিল: সুইজারল্যান্ড-জার্মানি (৪-২) ও কিউবা-রোমানিয়া (২-১)। অতিরিক্ত সময়ে যাওয়া তিনটি ম্যাচের ছিল: ইতালি-নরওয়ে (২-১), ব্রাজিল-পোল্যান্ড (৬-৫) ও চেকোস্লোভাকিয়া-নেদারল্যান্ডস (৩-০)।পোল্যান্ড-ব্রাজিল ম্যাচে মেলে দুই হ্যাটট্রিকের দেখা। এ আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক পোল্যান্ডের এরনস্ত উইল্মোভস্কির। পরেরটি করেন ব্রাজিলের লেওনেদাস। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের এক ম্যাচে ৪ গোল করার ইতিহাস গড়েন উইল্মোভস্কি।

কোয়ার্টার-ফাইনাল 

চারটি কোয়ার্টার ফাইনাল মাঠে গড়ায় একই দিনে- ১২ জুন। নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় তিনটি ম্যাচ হাঙ্গেরি-সুইজারল্যান্ড (২-০), ইতালি-ফ্রান্স (৩-১) ও সুইডেন-কিউবা (৮-০)। ১-১ ড্রয়ের পর ব্রাজিল-চেকোস্লোভাকিয়া রিপ্লে ম্যাচে মুখোমুখি হয়, সেখানে ব্রাজিল জেতে ২-১ গোলে।

কিউবার বিপক্ষে একই ম্যাচে সুইডেনের হ্যারি অ্যান্ডারসন এবং গুস্তাভ ওয়েতারসান হ্যাটট্রিকের আলো ছড়ান। 

সেমি-ফাইনাল 

১৬ জুন একই দিনে হয় দুটি সেমি-ফাইনাল। একটিতে প্রতিরোধই গড়তে পারেনি সুইডেন। ৫-১ গোলে জেতে হাঙ্গেরি। অন্যটিতে প্রবল লড়াই করে ব্রাজিল। তাদের ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত ফাইনালে যায় ইতালি। ১৭ জুন বোর্দোয় তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে সুইডেনকে ৪-২ গোলে হারায় ব্রাজিল।

ফাইনাল 

অবশেষে চলে আসে ১৯ জুন। ১৯৩৮। প্যারিসের অলিম্পিক স্টেডিয়াম মুখরিত হয় ৪৫ হাজার দর্শকের কলরবে। সকলে অপেক্ষায় জমজমাট ফাইনালের। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে জোড়া গোল করেন জিনো কোলাউস্সি এবং সিলভিও পিওলা। ৪-২ গোলের জয়ে শিরোপা ধরে রাখে ইতালি। হাঙ্গেরির গোল দুটি করেন পাল তিতকোস ও জিওর্জি সারোসি।তৃতীয় বিশ্বকাপের এই আসরে ১৮ ম্যাচে গোল হয় ৮৪টি। এর মধ্যে ৭ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন ব্রাজিলের লেওনিদাস দি সিলভা। 

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য