পাটিয়ালা, ২০ মে (হি.স.): পঞ্জাবের পাটিয়ালায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন পঞ্জাব কংগ্রেসের নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু। শুক্রবার দুপুরে পাটিয়ালার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আদালতের উদ্দেশে রওনা হন সিধু, এরপর আদালতে গিয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সিধুর মিডিয়া উপদেষ্টা সুরিন্দর দাল্লা জানিয়েছেন, “তিনি (নভজ্যোৎ সিং সিধু) চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। ডাক্তারি পরীক্ষা এবং অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
আত্মসমর্পণের জন্য শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টের কাছে সময় চেয়েছিলেন জেলের সাজা পাওয়া কংগ্রেস নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু। সিধুর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি শুক্রবার শীর্ষ আদালতের কাছে সিধুর আত্মসমর্পণের জন্য এক সপ্তাহ সময় চান। ‘মেডিক্যাল কারণে’ আত্মসমর্পণের জন্য এক সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন সিধু।এই আবেদনের প্রেক্ষিতে সিধুর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে শীর্ষ আদালত জানায়, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে যথার্থ আবেদন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে অনিচ্ছাকৃত খুনের একটি মামলায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট সিধুকে এক বছরের জেলের সাজা ঘোষণা করে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল। নির্দেশ মেনে শুক্রবার পটিয়ালা আদালতে আত্মসমর্পণের বার্তা দেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিং সিধু। শুক্রবার সকাল থেকেই সিধুর পটিয়ালার বাড়ির সামনে ভিড় জমতে শুরু করে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের। ছিলেন পটিয়ালা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নরেন্দ্র পাল লালি, প্রাক্তন বিধায়ক সুরজিৎ সিং ধীমান। দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। এরই মধ্যে সিধুর আইনজীবী তাঁর মক্কেলের আত্মসমর্পণের জন্য সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আর্জি জানান। এরপর এদিনই পাটিয়ালায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন পঞ্জাব কংগ্রেসের নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু।প্রসঙ্গত, ১৯৮৮-এর ২৭ ডিসেম্বর পটিয়ালার রাস্তায় গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে গুরনাম সিং নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন সিধু ও তাঁর বন্ধু রুপিন্দ্র সিং সান্ধু। অভিযোগ, গুরনামকে গাড়ি থেকে জোর করে টেনে বার করে মারধর করেন তাঁরা। ওই ঘটনার কয়েক দিন পরে মারা যান গুরনাম। ওই মামলায় নিম্ন আদালতে ছাড়া পেয়ে গেলেও ২০০৬-এ পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের রায়ে অনিচ্ছাকৃত খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন সিধু। হাইকোর্টের রায়ে তাঁর তিন বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু, পরের বছর সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সিধু। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৮-র গোড়ায় পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের সেই রায় বাতিল করে সিধুর এক হাজার টাকা জরিমানা করে। সে বছরই সুপ্রিম কোর্টে ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে গুরনামের পরিবার। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ বেঞ্চ পুনর্বিচারের নির্দেশ দেয়। পটিয়ালা কোর্ট প্রমাণের অভাবে মুক্তি দিলেও বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন সিধু।