স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ এপ্রিল : চাকরি হোক বা পড়াশুনো, বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে এবার কড়া আইন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি আমেরিকা থেকে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনায় লজ্জায় মুখ পুড়েছিল দেশের। সেই ঘটনার পরই বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে কড়া আইন আনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে বিদেশমন্ত্রক। জানা যাচ্ছে, শীঘ্রই এই বিষয়ে খসড়া প্রকাশ করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক বাদল অধিবেশনেই পেশ হবে বিলটি।
জানা যাচ্ছে, ‘ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৮৩’ আইনের বেশ কিছু সংশোধন করে নয়া আইন আনবে কেন্দ্র। চাকরি তো বটেই, শিক্ষা ও বাণিজ্যিক কাজে যারা বিদেশ যান তাঁদের জন্য লাগু হবে আইনটি। যেখানে বিভিন্ন এজেন্সির অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করার উপর জোর দেওয়া হবে। যার ফলে শুধুমাত্র এজেন্সিগুলির রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়া বা কালো তালিকাভুক্ত করা নয়, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে কাউকে বিপদে ফেললে অভিযুক্তদের ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও এক থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।
বিদেশমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩০৯৪টি বেআইনি ট্রাভেল এজেন্সির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এই সব এজেন্সির মাধ্যমেই চলেছে বিদেশে চাকরির নামে ভারতীয়দের পাঠানোর কারবার। নয়া আইনে এবার যারা বিদেশ যাবেন তাঁদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে হলফনামা দিতে হবে। এর ফলে ঠিক কতজন ভারতীয় বিদেশে রয়েছেন তাঁর সঠিক তথ্য থাকবে সরকারের কাছে। আইনে আইনে যারা শিক্ষার জন্য বিদেশ যেতেন তাঁদের কোনও উল্লেখ ছিল না। নয়া আইনে সেই সব এজেন্সির বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে যারা মিথ্যা কথা বলে পড়ুয়াদের বিদেশ পাঠাত। নয়া বিলকে শক্তিশালী করতে সেইসব রাজ্যগুলিরও পরামর্শ নেওয়া হবে যেখান থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ চাকরি ও শিক্ষার জন্য বিদেশ যান।
উল্লেখ্য, আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিদ্ধান্ত নেন দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী তাড়ানোর। কোমরে দড়ি, হাতে হাতকড়া পড়িয়ে শয়ে শয়ে ভারতীয়কে বিমানে করে ফেরত পাঠানো হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। শুধু তাই নয়, আরব, মায়ানমার, থাইল্যান্ডের মতো দেশে চাকরির টোপ দিয়ে ক্রীতদাস বানানোর বহু ঘটনা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে রাশ টানতেই এবার কড়া আইন আনতে চলেছে কেন্দ্র।