Tuesday, March 25, 2025
বাড়িজাতীয়আইএসআই কর্তার ঢাকা সফরে শঙ্কায় সেনাপ্রধান, দিল্লির চিন্তা বাড়াচ্ছে ‘চিকেন নেক’

আইএসআই কর্তার ঢাকা সফরে শঙ্কায় সেনাপ্রধান, দিল্লির চিন্তা বাড়াচ্ছে ‘চিকেন নেক’

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ ফেব্রুয়ারি : ভারত বিরোধিতার হাওয়া বইছে বাংলাদেশে। ক্রমশ সন্ত্রাসীদের আখড়া হয়ে উঠছে পদ্মাপাড়। জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছে একের পর এক কুখ্যাত জঙ্গি। এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে পাকিস্তান। ঢাকার সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক গড়ে তুলতে মরিয়া তারা। এমনকি কয়েকদিন আগে ঢাকা সফরে গিয়েছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রতিনিধি দল। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের বন্ধুত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। চিন্তা বাড়ছে ‘চিকেন নেক’ নিয়েও।

গতকাল বুধবার সংবাদ সংস্থামুখোমুখি হয়েছিলেন সেনপ্রধান। সীমান্ত সংঘাত, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সাক্ষাৎকারে কথা বলেন তিনি। উঠে আসে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় ঢাকায় আইএসআইয়ের প্রতিনিধি দলের বৈঠক নিয়ে। জবাবে উপেন্দ্র দ্বিবেদী সাফ বলেন, “বাংলাদেশকেই নিশ্চিত করতে যাতে তাদের মাটি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা না হয়। আমি একটি নির্দিষ্ট দেশের (পাকিস্তান) জন্য সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থল শব্দটি ব্যবহার করছি। সেখানকার নাগরিকরা যদি অন্য দেশে যায় তাহলে তারাও আমাদের প্রতিবেশি হিসাবেই গণ্য হবেন। এটা নিয়েই আমি উদ্বিগ্ন।” এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন করা হয় সেনাপ্রধানকে। তিনি বলেন, “যাই হোক বাংলাদেশ সেনার সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে।”

এক সময় ‘ভারতবন্ধু’ হিসাবেই পরিচিত ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেখ হাসিনার পতন ও রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই কথা বদলে গিয়েছে। একাত্তরের গণহত্যা ভুলে ইউনুসের ‘নতুন’ বাংলাদেশ এখন কাছে টানছে পাকিস্তানকে। ইসলামাবাদের সঙ্গে দহরম মহরম বাড়িয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসও। জানুয়ারির মাঝামাঝি ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের সেনাকর্তারা। এরপর গত ২১ জানুয়ারি সূত্র মারফৎ জানা যায়, পাকিস্তানের চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের সেনার প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌঁছেছে। সেই দলেই রয়েছেন আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম, ও আর এক অফিসার। বাংলাদেশের সেনার অফিসারদের সঙ্গে নাকি বৈঠকও করেছেন তাঁরা। তবে এই গোপন সাক্ষাতের বিষয়ে মুখে কুলুপ দুদেশের।

কিন্তু বাংলাদেশ-পাকিস্তানের এই ‘আঁতাত’ মোটেই হালকাভাবে নিচ্ছে না নয়াদিল্লি। কারণ এখন ভারতকে রক্তাক্ত করার ছক কষেছে আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি)। শেখ হাসিনার পতনের বাংলাদেশে অতি সক্রিয় হয়েছে আল কায়দার ছায়া সংগঠনটি। এই এবিটির সঙ্গে যোগ রয়েছে বিভিন্ন পাক জঙ্গি সংগঠনেরও। ক্ষমতায় এসে আনসারুল্লার প্রধান জসীমউদ্দিন রহমানিকে জেল থেকে মুক্ত করে ইউনুস সরকার। এখন তার মদতে ভূকৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চিকেন নেক এলাকায় আঘাত হেনে গোটা ভারত উত্তপ্ত করার ছক কষেছে এবিটি।

কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ চিকেন নেক? এই এলাকা ‘শিলিগুড়ি করিডর’ নামেও পরিচিত। শিলিগুড়ি শহরে অবস্থিত এই করিডর ভূকৌশলগত দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে সংকীর্ণ অংশে এটির প্রস্থ প্রায় ২০ কিলোমিটার। নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ এই তিন দেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে শিলিগুড়ি করিডর। ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যকে বেঁধে রেখেছে এই সংকীর্ণ স্থলভাগ। যার তুলনা করা চলে মুরগির গলার সঙ্গে।

সমরশাস্ত্রের সূত্র মেনে ভারতের মতো মহাশক্তিধর দেশকে দুর্বল করতে এই শিলিগুড়ি করিডরকেই পাখির চোখ করেছে আনসারুল্লা বাংলা টিম। তিনটি দেশের সীমান্ত এক জায়গায় মেশায় এই পথেই অস্ত্রশস্ত্র, মাদক ও জাল নোট ভারতে পাচার করার ছক কষেছে জেহাদিরা। পাশাপাশি সীমান্তের ছিদ্রপথে সন্ত্রাসবাদীদের এদেশে প্রবেশের রাস্তা তৈরি করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এই চিকেন নেক টার্গেট পাকিস্তানেরও। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, পাক জঙ্গিরা এবিটির সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আঘাত হানবে চিকেন নেকে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য