স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। ১০ সেপ্টেম্বর : মণিপুর ফের রক্তাক্ত। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ফের হিংসার আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। এহেন পরিস্থিতিতে পাঁচদিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হল সেখানে। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে পরিষেবা বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর। এছাড়াও তিন জেলা পূর্ব ইম্ফল, পশ্চিম ইম্ফল ও থৌবালে জারি কারফিউ।
প্রসঙ্গত, অভিযোগ, কুকি সম্প্রদায়ের সন্দেহভাজন জঙ্গিরা রাজ্যজুড়ে ড্রোন, রকেট হামলা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জিরিবাম-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় ড্রোন ও রকেট হামলার খবর মিলেছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিস্থিতি এককথায় নৃশংস বলা যায়। ইম্ফলের পশ্চিমে গ্রামের পর গ্রাম জ্বলছে। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বাড়ি-ঘর। বাতাসে বারুদের উৎকট গন্ধ।
রবিবার রাতে ইম্ফল পশ্চিম জেলার তিদ্দিম সড়কের কেইসামপাটে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। সমাবেশটিতে প্রায় এক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। পুলিশের গুলির শব্দে নিমেষে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। সব মিলিয়ে এক বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও অশান্তিতে রাশ টানতে ব্যর্থ প্রশাসন। ফলে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে কোণঠাসা মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে শান্তি ফেরাতে গঠিত ‘ইউনিফায়েড কমান্ডে’র নিয়ন্ত্রণ হাতে পেতে সুর চড়ালেন তিনি।
আর তাই হয়তো নিরাপত্তা বাহিনীর আর উপরে ভরসা করছে না গ্রামবাসীরা। তারাও হামলা রুখতে প্রস্তুত। আধুনিক দূরবিন নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের মানুষজন। হাতে হাই-টেক ওয়াকি টকি, পরনে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, বন্দুক। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, কুকি জঙ্গিরা রকেট এবং মর্টার নিয়ে হামলা চালাচ্ছে। বিষ্ণুপুর জেলার দু’জায়গায় বসতি এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশি চালানোর সময় ২১টি অত্যাধুনিক অস্ত্র, ২১টি বিস্ফোরক, প্রচুর গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে। এদিকে, চূড়াচাঁদপুরে জঙ্গিদের তিনটি বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাহিনী। সোমবারের মতো মঙ্গলবারও রাজ্যজুড়ে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে মণিপুর বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর।