স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৭ এপ্রিল: ভক্তরা বলেন, রাম নামের মহিমা অপার। তাই বলে পরীক্ষার খাতায় ‘জয় শ্রী রাম’ লিখে শুধু পাশ নয়, একেবারে ৫৬ শতাংশ নম্বর! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও ‘রামের রাজ্য’ উত্তর প্রদেশেই ঘটেছে এমন কাণ্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ে এমন ছেলেখেলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়েছে। পরীক্ষকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ২ অধ্যাপককে সাসপেন্ড করেছেন উপাচার্য।
উত্তরপ্রদেশের বীর বাহাদুর সিং পূর্বাঞ্চল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত ডি-ফার্মার প্রথম এবং দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার প্রকাশ্যে এসেছে এই বেনিয়মের ঘটনা। জানা যাচ্ছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছাত্র দিব্যাংশু ২০২৩ সালের ৩ অগাস্ট ডি ফার্মার প্রথম সেমিস্টারের ১৮ জন পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর দিয়ে তাদের উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানায়। পাশাপাশি ৫৮ জন পড়ুয়ার উত্তরপত্র দেখতে চান তথ্যের অধিকার আইনে। যদিও মাত্র ৪২ টি উত্তরপত্র দেওয়া হয় তাঁকে। সেই উত্তরপত্রেই দেখা যায়, প্রশ্নের উত্তর না লিখে পরীক্ষার খাতায় জয় শ্রী রাম লিখেছেন ৪ পড়ুয়া। পাশাপাশি খাতা ভরাতে দেশের ক্রিকেটারদের নাম লেখা হয়েছে। এই সব লিখেই ৭৫-এর মধ্যে ৫২ পেয়েছেন পড়ুয়া। অর্থাৎ ৫৬ শতাংশ নম্বর। চমকে দেওয়ার মতো এমন ঘটনা সামনে আসার পর রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়।
রাজভবনের কাছে বিষয়টি নিয়ে তথ্য প্রমাণ-সহ অভিযোগ জানান দিব্যাংশু। অভিযোগে বলা হয়, পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে তাদের পাশ করিয়ে দিয়েছেন অধ্যাপকরা। পাশাপাশি উত্তরপত্র রাজভবনে পাঠিয়ে জানানো হয়, ৮০ টি উত্তরপত্রের মধ্যে ৫০ টিতে বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজভবনের তরফে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে গঠন করা হয় কমিটি। দীর্ঘ ৮ মাস পর কমিটি জানায়, ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ সত্য।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর বন্দনা সিং জানান, পরীক্ষার খাতা দেখার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত দুই অধ্যাপক ডক্টর বিনয় ভার্মা এবং ডক্টর আশুতোষ গুপ্তকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, তদন্তের প্রেক্ষিতে ওই দুজনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।