স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। ১৩ এপ্রিল : গত বছরের ৩ মে। কুকি-মেতেই জাতি সংঘর্ষে জ্বলে হতে মণিপুর। প্রাণ হারান দুশোর উপর মানুষ। ঘরছাড়া লক্ষাধিক। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেও রক্ত ঝরার খবর মিলেছিল সেরাজ্যের রাজধানী ইম্ফল থেকে। কিন্তু প্রায় দেড়মাস ধরে আর তেমন কোনও সংঘর্ষের খবর মেলেনি উত্তর-পূর্বের রাজ্যটি থেকে। তবে এখনও বেশ থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বেশ কয়েকটি এলাকায়। এই আবহেই ভোট হতে চলেছে মণিপুরে। সেখানকার ঘরছাড়া মানুষদের জন্য এবার তৈরি করা হল বিশেষ ভোটকেন্দ্র।
আগামী ১৯ ও ২৬ এপ্রিল প্রথম দফায় মণিপুরে ভোট। এই লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় সেরাজ্যের প্রায় ৫ হাজার মানুষের জন্য ২৯ টি বিশেষ ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এঁরা সকলেই সংঘর্ষের জেরে বাড়ি-ঘর হারিয়েছেন। আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন ক্যাম্পে। কিন্তু তাঁরাও এবার গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল হবেন। এই বিষয়ে শুক্রবার ইম্ফল ওয়েস্ট ডেপুটি কমিশনার কিরণ কুমার জানিয়েছেন, “মণিপুরে হিংসার ঘটনা ও ঘরছাড়াদের কথা মাথায় রেখে আমরা বেশ কয়েকটি বিশেষ ভোটকেন্দ্র তৈরি করেছি। যাতে ঘরছাড়া মানুষরাও নিজেদের মূল্যবার ভোট প্রদান করতে পারেন। সাধারণ নির্বাচনের জন্য আমরা ২৯টি বুথের ব্যবস্থা করেছি।”
ভোটদান চলাকালীন সুরক্ষা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “ভোটাররা নিজেদের নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। তাঁদের জন্য আলাদাভাবে কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না তবে যাতায়াতের দিকটি মাথায় রাখা হয়েছে। আমরা নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ নজর রেখেছি। আশা করছি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী জওয়ানরা। গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হচ্ছে। ভোটদানের সুযোগ থেকে কেউ বঞ্চিত হবেন না।” গত মাস দেড়েক ধরে মণিপুরে শান্তি বজায় রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডেপুটি কমিশনার।
বলে রাখা ভালো, গত বছরের মে মাসের পর মণিপুর ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশের রাজনীতি। জ্বলতে থাকা মণিপুরে কেন যাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সেই প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তবে গত বছরের জুন মাসে চারদিনের জন্য মণিপুর সফরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পরেও লাগাতার হিংসার ঘটনা ঘটেছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে। কিন্তু এখন সেখানে জোর কদমে চলছে ভোটের প্রস্তুতি। এবার নির্বাচন আবহে চলতি সপ্তাহে ফের একবার মণিপুরে যাবেন শাহ।