স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০ এপ্রিল : বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতে আঘাত আনতে পারে আইএসআই জঙ্গি সংগঠন। উত্তর-পূর্বের রাজ্য গুলোকে চরম সতর্ক করলো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এমনটাই খবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সূত্রে। সন্ত্রাসবাদ দমনে যুদ্ধকালীন তৎপরতা চলছে। অ্যাকশন প্ল্যান পুরোপুরি প্রস্তুত। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র ধরে একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র অনুযায়ী, পাকিস্তানের আইএসআই জঙ্গি বাহিনী ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের আইএসআই জঙ্গি গোষ্ঠীর ১০ জন সদস্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতে আক্রমণ করার ব্ল্যাক প্রিন্ট তৈরি করছে। সর্বভারতীয় ওই সংবাদমাধ্যম কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র ধরে দাবি করেছে, ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর রিপোর্ট অনুযায়ী ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আইএসআইয়ের ৫ জঙ্গি চট্টগ্রামে ঘাঁটি গেড়েছে আর ৫ জঙ্গি ঘাঁটি গেড়েছে ঘাগড়াছড়িতে। উল্লেখ্য গত বছরের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশে চলছে ইউনুস সরকার। ইউনুস সরকারের আমলে বাংলাদেশে বর্তমানে রাজত্ব কায়েম রেখেছে মৌলবাদীদের কট্টরপন্থীরা। সূত্রের খবর এই কট্টরপন্থীরা মদদ যোগাচ্ছে আইএসআই জঙ্গিদের। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর গত বছর ডিসেম্বর মাসে প্রথম বারের মত বাংলাদেশ সফরে এসেছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ দুই আধিকারিক। এই তথ্য রয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও।
যা ভারত সরকার মোটেও ভালো চোখে নেয় নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র অনুযায়ী একটা বিষয় স্পষ্ট পাকিস্তান ভারতের মাটিতে জঙ্গি কার্যকলাপ অব্যাহত রাখতে চাইছে এখন বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে কাজে লাগিয়ে। যার কারণে পেহেলগাওয়ে জঙ্গি হামলার পর আইএসসি জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতে আক্রমণ শানাতে পারে এমন আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যার কারণে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোকে চরম সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বাংলাদেশের তিন দিক থেকে বেষ্টিত হওয়ার কারণে স্বাভাবিক ভাবেই ত্রিপুরাকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করার জন্য স্ক্যানিং করে নিয়েছে আইএসআই জঙ্গি সংগঠন। এই বিষয়টাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যার কারণে ত্রিপুরায় ভারতীয় সীমান্ত মুড়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার বেস্টনিতে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য সহ ত্রিপুরায় প্রতিদিন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী ধরা দিচ্ছে পুলিশের জালে।
বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী রাজ্য হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যাটা ত্রিপুরাতেই বেশি। যা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও উদ্বেগের কারণ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র ধরে এমনটাই দাবি করেছে সেই সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার মানিক সাহা নিরাপত্তা নিয়ে কোনো রকমের ঢিলেমি বরদাস্ত করতে চাইছে না। কঠোর নিরাপত্তা প্রদান এবং তল্লাশি অভিযানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন আরক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেও প্রতিটি রাজ্যকে সতর্ক করে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে এও বলা হয়েছে, যেকোনো এলাকায় সাধারণ মানুষ সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিদের দেখলে কিংবা কোনো ব্যক্তির আচরণ অস্বাভাবিক মনে হলে সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের গোচড়ে বিষয়টি নিয়ে যাওয়ার জন্য। সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারত সরকার এই মুহূর্তে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।