স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৬ এপ্রিল : অতীতে একাধিকবার কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু এখন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে অন্য ‘রহস্য’। পহেলগাঁও হামলার পর কার্যত সম্মুখ সমরে ভারত-পাকিস্তান। এই নারকীয় ঘটনা কড়া নিন্দা জানালেও এবার ট্রাম্পকে বলতে শোনা গেল, “কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের লড়াই ১০০০ বছরের। কিন্তু দুই দেশই আমার বন্ধু। এই সমস্যার সমাধান তাদেরই করতে হবে।” অর্থাৎ এককথায় ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিলেন, দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করবেন না। ফলে ভবিষ্যতে যুদ্ধ বাঁধলে তিনি ‘বন্ধু’ ভারতের পাশে কতটা দাঁড়াবেন সেনিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ট্রাম্পের এহেন মন্তব্যে দিশেহারা নেটিজেনরাও।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। এই হামলার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে থেকে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “ভারত আর পাকিস্তান দু’জনেই আমার খুব কাছের। আমার বন্ধু। কাশ্মীরে তাদের লড়াই ১০০০ বছর ধরে চলে আসছে। এই লড়াই আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে। এছাড়া ওই সীমান্তে ১৫০০ বছর ধরে উত্তেজনা তৈরি হয়ে আছে। আমার মনে হয়, দুই দেশই পারবে এই সমস্যার সমাধান করতে। আমি নিশ্চিত। আমি দু’দেশের রাষ্ট্রনেতাকেই চিনি। তাদের নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই মেটাতে হবে। তবে এই জঙ্গি হামলা নিন্দনীয়। এগুলো মানুষ প্রাণ হারালেন।”
এদিকে, ট্রাম্পের এই নতুন মন্তব্যে নেটিজেনদের মধ্যে জল্পনা বেড়েছে। কেউ কেউ বলছেন, ‘১৯৪৭ সালের আগে পাকিস্তানের অস্তিত্বই ছিল না। যার ফলে পাকিস্তানের বয়স ৭৮ বছর। যা ট্রাম্পের দাবির চেয়ে ৯২২ বছর কম।’ আবার কেউ লিখছেন, ‘কেবল ট্রাম্পই এমন ব্যক্তি, যিনি বলতে পারেন, পাকিস্তান এবং ভারত এক হাজার বছর ধরে কাশ্মীর নিয়ে লড়াই করছে। পাকিস্তান এবং ভারতের এখনও একশো বছরও হয়নি।” বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় হামাস-ইজরায়েল সংঘাত এবং রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে নিজে থেকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতের ক্ষেত্রে যে হোয়াইট হাউস অন্য পন্থা অবলম্বন করবে তা ট্রাম্পের বক্তব্যে স্পষ্ট।
অন্যদিকে, ফের একবার সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে পহেলগাঁও কাণ্ডে আন্তর্জাতিক তদন্ত চাইল পাকিস্তান। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা মহম্মদ আসিফ বলেছেন, “পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে যে কোনও আন্তর্জাতিক তদন্তকে স্বাগত জানাবে পাকিস্তান। আমরা চাই এই ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তই হোক। আমর সব রকমভাবে তদন্তে সাহায্য করবে। ভারত সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং নিজেদের গোয়েন্দা ব্যর্থতা ঢাকতে পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। ওরা কোনও প্রমাণ, কোনও তদন্ত ছাড়াই আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে। আমরা চাই না যুদ্ধ বাঁধুক। এই সংঘাত আরও তীব্র হোক। কারণ যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠলে তা আঞ্চলিকভাবে ধ্বংস ডেকে আনবে।” ফলে শিমলা চুক্তি বাতিল করে তৃতীয়পক্ষকে এই সংঘাতে টানতে চাইছে ইসলামাবাদ।