স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৫ এপ্রিল : পাকিস্তানই যে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের জনক অকপটে এবার তা স্বীকার করে নিল ইসলামাবাদ। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ‘সন্ত্রাস’ ইস্যুতে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাওয়াজা আসিফ জানালেন, “এটা সত্যি যে গত তিন দশক ধরে পাকিস্তান সন্ত্রাসকে মদত দিয়ে এসেছে।” জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান পরিচালিত জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পাক মন্ত্রীর এই স্বীকারোক্তিতে স্বাভাবিকভাবেই সরগরম কূটনৈতিক মহল।
জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরম আকার নিয়েছে। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের ইন্ধন স্বীকার করে নেন আসিফ। তিনি বলেন, “আমরা এই ঘৃণ্য কাজ গত তিন দশক ধরে করে এসেছি।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “এই কাজ পাকিস্তান করেছে, আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ পশ্চিমের দেশগুলির জন্য। এটা আমাদের ভুল ছিল। যার ফল আমাদের ভুগতে হচ্ছে। আমাদের সেই অতীতের জন্য আপনি (সাংবাদিক) আমাকে এই প্রশ্ন করছেন।” এরপর আক্ষেপের সুরে বলেন, “যদি আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে এবং পরবর্তীতে ৯/১১-এর পরবর্তী যুদ্ধে যোগ না দিতাম, তাহলে পাকিস্তানের ইতিহাস অন্যরকম হত।”
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটককে নৃশংস হত্যার ঘটনায় নিন্দায় মুখর গোটা বিশ্ব। ইতিমধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে উঠে এসেছে পাক যোগের ইঙ্গিত। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানের লস্কর ই তইবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা ‘টিআরএফ’। এ প্রসঙ্গে পাক মন্ত্রীর দাবি, “পাকিস্তান থেকে লস্কর ই তইবা শেষ হয়ে গিয়েছে। অতীতে লস্করের সঙ্গে পাকিস্তানের কিছু সম্পর্ক ছিল ঠিকই তবে বর্তমানে যে সংগঠন নেই তার ছায়া সংগঠন কথা থেকে আসছে। পাকিস্তানের সঙ্গে লস্করের যোগ খুঁজে পাওয়ার অর্থ এই নয় যে আমরা তাঁদের সাহায্য করব।”
তবে পহেলগাঁও হামলায় পাকমন্ত্রী পাকস্তান সরাসরি যোগ অস্বীকার করলেও জানা যাচ্ছে, পিওকে ও পাকিস্তানের হ্যান্ডলারদের সহায়তায় নাশকতার এই ছক অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করা হয়েছিল। ওপার থেকে অস্ত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের এদেশে পাঠানোর পাশাপাশি খোঁজা হয়েছিল এমন পর্যটনস্থল, যেখানে পর্যটকের সংখ্যা প্রচুর হলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে তুলনামূলক কম। শুধু তাই নয়, আততায়ীদের কাছে ওপার থেকে রিয়াল টাইম নানা নির্দেশও পাঠানো হচ্ছিল বলেও শোনা যাচ্ছে। যে চার আততায়ী মঙ্গলবার নাশকতা চালিয়েছিল, তাদের হেলমেটে ক্যামেরা লাগানো ছিল। যার ফলে ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং ও রিয়াল টাইম আপডেটও নিচ্ছিল তাদের ‘আকা’-রা। এরা পুঞ্চেও এই ধরনের সন্ত্রাস করেছে বলে তথ্য সামনে আসছে।