স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৫ ডিসেম্বরঃ বাংলাদেশে চরম অত্যাচারের শিকার হিন্দুরা। সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে সংঘাত বেড়েছে ভারতের সঙ্গে। এই অশান্ত পরিস্থিতিতে দেশে পাকিস্তানিদের স্বাগত জানাচ্ছে মহম্মদ ইউনুসের সরকার! বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে থাকা পাকিস্তানের নাগরিকরা যেন সহজে বাংলাদেশের ভিসা পান। এমনই নির্দেশ জারি করেছে ঢাকা। এমনকি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদেরও যাতে ভিসা পেতে কোনও অসুবিধা না হয় সেই বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত। আশঙ্কা, এবার পাক জঙ্গিদের আখড়া হয়ে উঠবে ঢাকা!
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করতে মরিয়া পাকিস্তান। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াচ্ছে ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারও। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিকিউরিটি সার্ভিস ডিভিশন থেকে বিদেশমন্ত্রকে কাছে এক চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে সাফ বলা হয়েছে, পাকিস্তানিদের জন্য যেন বাংলাদেশের ভিসা পাওয়া সহজতর করা হয়। এর পরই এই নির্দেশিকা সমস্ত বাংলাদেশি দূতাবাস এবং ডেপুটি হাই কমিশনগুলোর জন্য জারি করা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশের ভিসা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের জন্যও ঝঞ্ঝাটমুক্ত করতে বলা হয়েছে। যাতে যেকোনও জায়গা থেকেই তাঁরা সহজে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারেন।
উল্লেখ্য, অশান্ত পরিস্থিতিতেই ৩ নভেম্বর ঢাকার গুলশনে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আহমেদ মারুফ। হাসিনার পতনের নেপথ্যে ইসলামাবাদের কলকাঠি নাড়ার নানা তত্ত্ব উঠে এসেছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে। আওয়ামি লিগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হতেই বিএনপির সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াতে শুরু করে পাকিস্তান। হাসিনা গদি হারানোর কয়েকদিন মধ্যেই খালেদা জিয়ার দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন পাক প্রতিনিধিরা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ফের একবার যখন উত্তাল বাংলাদেশ, ঠিক তখনই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে পাকিস্তান।আর উল্লেখযোগ্য ভাবে এই সাক্ষাতের পরই পাকিস্তানিদের সুবিধার্তে এহেন নির্দেশিকা জারি করেছে ইউনুস সরকার।
বিশ্লেষকদের মতে, হাসিনা গদি হারানোর পর থেকেই বাংলাদেশে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে জামাত, হেফাজতে ইসলামের মতো মৌলবাদী দলগুলো। তাদের বাড়বাড়ন্তে বিপন্ন হিন্দুরা। বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার জামাত-হেফাজতে। চুপ নেই বিএনপিও। যে হারে অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে তাতে বহু হিন্দু বাংলাদেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন। ভারতীয় হিন্দু জানলে সেই অত্যাচারের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ছে। এদিকে জামাতের মতো দলের কাছে হাত-পা বাঁধা ইউনুস সরকারের। এই পরিস্থিতিকেই কাজে লাগাতে চাইছে পাকিস্তান। যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ভারতের কপালে। কারণ পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে আগামী দিনে বাংলাদেশে অবাধ বিচরণ হতে পারে পাকিস্তানিদের। বাড়বে পারে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। যার আঁচ এসে লাগবে দিল্লিতেও। পদ্মাপার থেকেই নাশকতার ছক কষা হবে। ফলে ঢাকা-ইসলামাবাদের এই ‘বন্ধুত্বে’র উপর কড়া নজর রাখছে ভারত।