স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৮ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর ভাষণে রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমেরিকার জনগণ নজিরবিহীন, শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে।” আর এই ম্যান্ডেটের জোরেই এবার ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্সিতে ক্ষমতায় খুবই কমই বাধার মুখে পড়বেন।প্রেসিডেন্সির প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যেসব বেড়াজালের মুখে পড়েছিলেন সেগুলো এখন আর নেই। কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে এবার ট্রাম্পের মিত্রই বেশি।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে জন ম্যাককেইনের মতো স্বতন্ত্রমনা মানুষ তার জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১৬ সালে ট্রাম্প নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর অনেক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এবং তার নিজের প্রশাসনের সদস্যরা তাকে নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। বিশেষত, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স নির্বাচনি ফল উল্টে দেওয়ার ট্রাম্পের পরিকল্পনায় সামিল হননি।লিজ চেনি এবং সিনেটর ম্যাককেইনের মতো কংগ্রেস রিপাবলিকান সদস্যরা ট্রাম্পকে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন সেইসব মানুষেরা বেশিরভাগই চলে গেছেন। তাদের জায়গায় এসেছেন সেইসব আইনপ্রণেতারা যারা তাদের কেরিয়ারের জন্য ট্রাম্পের কাছে ঋণী। ফলে তারা ট্রাম্প যা চান তাই করতেই অনেক বেশি ইচ্ছুক।
এখন ট্রাম্পের জন্য রক্ষণশীল বিচারক পাওয়া এবং সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া অনেক বেশি সহজ হবে। তার ওপর আছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে তিন বিচারপতিই ট্রাম্পের নিয়োগ দেওয়া। তারা গত জুলাইয়ে ট্রাম্পকে ফৌজদারি অপরাধে বিচার থেকে প্রেসিডেন্সিয়াল ছাড় দিয়ে রায় দিয়েছেন।বিচারকদের এই ‘ব্ল্যাংক চেক’- এর কারণে ট্রাম্প ফৌজদারি অপরাধে বিচার থেকে পার পেয়ে যেতে পারেন, এমনকী বেআইনি কোনও পদক্ষেপও নিতে পারেন। যেমন: দেশের মাটিতে মোতায়েনের জন্য সেনা তলব করা। এ ধরনের কাজ বেআইনি। কিন্তু এমন পদক্ষেপ নিলেও ট্রাম্পের বিচার কেউ করতে পারবে না।
১৯৮৮ সালের পর কেবলমাত্র দ্বিতীয় একজন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে পপুলার ভোটে জিতে নেওয়ার কারণে ট্রাম্প জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক ম্যান্ডেটও দাবি করতে পারবেন। অক্টোবরে পরিচালিত রয়টার্স/ইপোসস জরিপে দেখা গেছে, ১০ জনে প্রায় ৯ জন রিপাবলিকান ভোটারের দৃষ্টিভঙ্গিই ট্রাম্পের অনুকূলে।গত ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকানরা সিনেটের দখলও নিয়েছে। তবে তারপরও ট্রাম্পের সামনে একটা বাধা থাকার সম্ভাবনা আছে। সেটি হচ্ছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে। ডেমোক্র্যাটরা প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। আর তেমন হলে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের আইন প্রণয়ন কর্মসূচি আটকে দিতে পারে এবং তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে পারে।
তবে শেষ পর্যন্ত যদি রিপাবলিকানরাই সব জায়গায় ছেয়ে যায় তাহলে তারা ওয়াশিংটনে বিভিন্ন কর্মসূচির নির্দেশ দেওয়ার অবস্থায় চলে যাবে। এতে করে ট্রাম্পের কর কমানো এবং অভিবাসনে কড়াকড়ি করার মতো নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করা সহজ হবে।ব্রুকিং ইন্সটিটিউটের বিল গালস্টোন বলেন, ট্রাম্প অন্তত দুই বছরের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ সরকার পাবেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই সময়ে তাদের কর্মসূচি এগিয়ে নিতে পারবে, সেটি যা-ই হোক না কেন। আর তা করতে তাদেরকে তেমন রাজনৈতিক বাধার সম্মুখীনও হতে হবে না।