স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ আগস্ট: রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে অন্তত ১১টি ড্রোন দিয়ে আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করেছে ইউক্রেইন, যাকে অন্যতম বড় ড্রোন হামলা বলে বর্ণনা করেছেন রুশ কর্মকর্তারা।বুধবারের এ আক্রমণের সময় রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স ইউক্রেইনীয় ড্রোনগুলো গুলি করে ভূপাতিত করে।২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লড়াই প্রধানত ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ক্ষেতখোলা, বন ও গ্রামগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু ৬ অগাস্ট ইউক্রেইন সীমান্ত অতিক্রম করে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুর্স্ক অঞ্চলে কয়েক হাজার সেনা পাঠানোর পর থেকে যুদ্ধ নতুন সীমানায় ছড়িয়েছে।
কয়েক মাস ধরে রাশিয়ার রিফাইনারি ও বিমানক্ষেত্রগুলোতে ড্রোন দিয়ে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেইন। এসব হামলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতিও হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারী দেশটির। তবে দুই কোটি ১০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত মস্কো অঞ্চলে ড্রোন হামলা বিরল হয়ে উঠেছিল।রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের এয়ার ডিফেন্স রাশিয়ার ভূখণ্ডের আকাশে থাকা শত্রুর ৪৫টি ড্রোনকে ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে ১১টি ছিল মস্কো অঞ্চলের, ২৩টি সীমান্ত অঞ্চল ব্রাইয়ানস্কের, ছয়টি বেলগোরদ অঞ্চলের, তিনটি কালুগা অঞ্চলের এবং দু’টি কুস্র্ক অঞ্চলের আকাশে।
মস্কোর মেয়র সের্জেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন, মস্কো অঞ্চলের উপরে থাকা অনেকগুলো ড্রোন পদোলস্ক শহরের আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে।মস্কো অঞ্চলের এই শহরটির অবস্থান ক্রেমলিন থেকে প্রায় ৩৮ কিলোমিটার দক্ষিণে। এসব ড্রোন হামলার ঘটনার কেউ হতাহত হয়েছে বলে খবর হয়নি।বুধবার টেলিগ্রাম অ্যাপে সোবিয়ানিন বলেন, “এ পর্যন্ত ড্রোন দিয়ে মস্কোতে হামলা চালানোর অন্যতম বৃহত্তম প্রচেষ্টা এটি। মস্কোর বহু স্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে শত্রুর এ হামলা সফলভাবে ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।”
রয়টার্স জানিয়েছে, ড্রোনগুলো যখন ধ্বংস করা হচ্ছে তখন মস্কোর প্রশস্ত রাজপথগুলোর দুই পাশের ক্যাফে, রেস্তোরাঁ ও দোকানগুলোতে প্রচুর লোকজন থাকলেও তাদের মধ্যে উদ্বেগ তেমন একটা দেখা যায়নি। রাজধানী শহরকে অত্যন্ত সতর্কভাবে যুদ্ধের উত্তাপ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। আর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তখন ক্রেমলিনে সফরকারী চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন।নাম না প্রকাশ করার শর্তে রাশিয়ার দুই নাগরিক রয়টার্সকে বলেছেন, ব্যর্থ এ ড্রোন হামলা দেখিয়ে দিয়েছে মস্কো এখন কতোটা সুরক্ষিত, কুর্স্ক ও মস্কোতে আক্রমণ চালানোর মাধ্যমে ইউক্রেইন ‘আগুন নিয়ে খেলা’ শুরু করেছে।এদিকে পূর্ব ইউক্রেইনে রুশ বাহিনী আরও অগ্রগতি লাভ করেছে আর কুর্স্ক অঞ্চলে ইউক্রেইনীয় বাহিনীর অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করতে লড়াই করে যাচ্ছে। কুর্স্কে ইউক্রেইনের হামলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হওয়া প্রথম বড় ধরনের বিদেশি হামলা।