স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১১ আগস্ট: রাশিয়ার পশ্চিম কুরস্ক অঞ্চলে হামলার পর এই প্রথম মুখ খুললেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বললেন, ‘‘রুশ ভূখণ্ডে আক্রমণ হানছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।’’
শনিবার রাতে জেলেনস্কি একটি ভিডিয়োবার্তায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পশ্চিম কুরস্কে রাশিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে ইউক্রেনীয় সেনা। তারা সেখানে হামলাও করেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জেলেনস্কির দাবি, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রচেষ্টাতেই যুদ্ধ পরিস্থিতি দ্রুত ‘আগ্রাসী মোড়’ নিচ্ছে।
মঙ্গলবার থেকে রাশিয়ায় নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে কিয়েভ। সেদিনই রাশিয়ার অভ্যন্তরে প্রায় ১০ কিমিরও বেশি অগ্রসর হয়েছে তারা। মস্কো ২০২২ সালের শুরুতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর থেকে এটিই ইউক্রেনের গভীরতম প্রত্যাঘাত। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার ভোরেও পাল্টা জবাবে ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ-সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে আঘাত হেনেছে রাশিয়া।
শনিবার রাতের ভাষণে ইউক্রেনের ‘যোদ্ধা’দের ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলেনস্কি। জানিয়েছেন, ইতি মধ্যেই রাশিয়ায় অভিযান নিয়ে দেশের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার সহ অন্যান্য কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই রাশিয়ার ভূখণ্ডে আকাশপথে হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেন। গত মঙ্গলবারও কুরস্ক সীমান্তবর্তী এলাকায় ইউক্রেন সেনার ড্রোন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে পাঁচ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। রাশিয়ার প্রদেশ কুরস্কের গভর্নর অ্যালেক্সি স্মাইরভ গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, রুশ ভূখণ্ডে ধারাবাহিক ভাবে ড্রোন হামলা শুরু করেছে ইউক্রেন সেনা। তাঁর অভিযোগ, ‘সামরিক লক্ষ্যবস্তুর’ বদলে ইউক্রেন সেনা বেছে বেছে জনবসতির উপরে হামলা চালাচ্ছে। সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রায় ৭৬ হাজারেরও বেশি নাগরিককে কুরস্ক অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাশিয়ার ভোরোনজ় ও বেলগোরোড অঞ্চলেও ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার খবর এসেছে। এর পর থেকেই রাশিয়ার সীমান্তবর্তী তিন এলাকায় জারি হয়েছে কড়া নড়রদারি।
প্রসঙ্গত, গত ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত আড়াই বছরে দু’দেশের সামরিক সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ এখনও ঘরছাড়া। তবে ইউক্রেনের তরফেই হতাহতের সংখ্যা বেশি। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তছনছ হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের অজস্র ছবির মতো সাজানো শহর। প্রাথমিক ভাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বাহিনী ‘আত্মরক্ষার লড়াই’ চালালেও গত কয়েক মাসে মূল রুশ ভূখণ্ডে প্রতি আক্রমণ শুরু করেছে তারা।