Monday, July 21, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদকমলা হ্যারিস ভারতীয় নাকি কৃষ্ণাঙ্গ, প্রশ্ন ট্রাম্পের

কমলা হ্যারিস ভারতীয় নাকি কৃষ্ণাঙ্গ, প্রশ্ন ট্রাম্পের

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১ আগস্ট: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস নিজেকে হঠাৎ কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন উল্লেখ করে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, কমলা আগে তাঁর কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয় সামনে আনতেন না। গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় বার্ষিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প এ কথা বলেন।ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘কমলা হ্যারিস সব সময় ছিলেন ভারতীয়। তিনি শুধু ভারতীয় ঐতিহ্যকে মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। কয়েক বছর আগে তিনি নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করার আগপর্যন্ত আমি জানতাম না যে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ। এখন তিনি কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে গেলেন এবং এই পরিচয়ে পরিচিত হতে চান।’ট্রাম্প যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন সম্মেলনে উপস্থিত এক হাজার দর্শকের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিমা করছিল।  

এ সময় ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি আসলে জানি না, তিনি (কমলা হ্যারিস) কি ভারতীয়, নাকি কৃষ্ণাঙ্গ? তবে আপনারা জানেন, আমি দুই পরিচয়কেই শ্রদ্ধা করি। কিন্তু নিশ্চিতভাবে তিনি সেটি করেন না। কারণ, তিনি শুরু থেকেই ভারতীয় ছিলেন। হঠাৎ করেই তিনি সুর পাল্টে একজন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত হলেন।’যদিও ট্রাম্পের কথাটি সত্য নয়। পারিবারিক পরিচয়ের জায়গা থেকে কমলা হ্যারিস ভারতীয় ও জ্যামাইকান ঐতিহ্য বহন করেন। লম্বা সময় ধরেই তিনি নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় বলে পরিচয় দিয়ে আসছেন। কমলা হ্যারিসই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় আমেরিকান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।কমলা হ্যারিসকে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) যা বলেছেন, তা অত্যন্ত জঘন্য। এটা অপমানজনক।’

গত মাসের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা শুরু করার পর অনলাইনে লৈঙ্গিক ও বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হচ্ছেন কমলা হ্যারিস। কিছুসংখ্যক উগ্র ডানপন্থী ব্যবহারকারী অনলাইনে তাঁর বর্ণবাদী পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। ট্রাম্প নিজেও ব্যক্তিগতভাবে কমলাকে আক্রমণ করছেন।যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ব্ল্যাক জার্নালিস্টসের ওই সম্মেলনে তিন কৃষ্ণাঙ্গ নারী সঞ্চালক ছিলেন। এর মধ্যে এবিসি নিউজের প্রতিবেদক রেচেল স্কট ট্রাম্পের বেশ কিছু বর্ণবাদী মন্তব্য তালিকাভুক্ত করেন এবং প্রশ্ন করেন, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাররা কেন ট্রাম্পকে সমর্থন দেবেন? এ সময় সম্মেলনস্থলের পরিবেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।

জবাবে ট্রাম্প এ প্রশ্নকে ভয়াবহ, শত্রুতাপূর্ণ ও অসম্মানজনক বলে উল্লেখ করেন। এবিসিকে ভুয়া সংবাদমাধ্যম বলে দাবি করেন তিনি।এ সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আব্রাহাম লিঙ্কনের পর আমি ছিলাম কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের জন্য সবচেয়ে ভালো প্রেসিডেন্ট।’ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর দর্শকসারি থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালে ট্রাম্পের বিভিন্ন মিথ্যা মন্তব্যের কারণে দর্শকদের একজন চিৎকার করে বলেন, ‘স্যার, আপনার লজ্জা নেই?’ পরে অবশ্য অন্যরা তাঁকে চুপ করিয়ে দেন।  রিপাবলিকান কৌশলবিদ হুইট এরিস বলেন, হ্যারিসের বর্ণভিত্তিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচক্ষণতার পরিচয় দেননি ট্রাম্প। হ্যারিসের পরিচয়ে নিয়ে কথা না বলে তাঁর বিভিন্ন নীতি নিয়ে কথা বলতে পারতেন তিনি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!