স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০ জুলাই: ইসরায়েল লেবাননের ইরানপন্থি রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ওপর আঘাত হানতে চায় কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ুক তা চায় না, জনিয়েছেন দেশটির দুই কর্মকর্তা।ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির দ্রুজ শহর মাজদাল শামসের একটি ফুটবল মাঠে শনিবার এক রকেট হামলায় ১২ শিশু-কিশোর নিহত হয়, এর জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে তেল আবিব। তারপর থেকে ইসরায়েলের পাল্টা হামলা সামলানোর অপেক্ষায় প্রস্তুতি নিয়ে আছে লেবানন।
হিজবুল্লাহ এ হামলার সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছে।সোমবার ইসরায়েলের আরও দুই কর্মকর্তা জানান, কয়েকদিন ধরে লড়াই চলতে পারে এমন প্রস্তুতি নিয়ে হিজবুল্লাহর ওপর আঘাত হানতে যাচ্ছে ইসরায়েল।সোমবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, লেবাননের ওপর যে কোনো ইসরায়েলি হামলা দেশটির জন্য ‘গুরুতর পরিণতি’ বয়ে আনতে পারে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁকে এক ফোন কলে বলেছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট।
পেজেশকিয়ান আর বিস্তারিত কিছু বলেননি বলে জানিয়েছে তারা।বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যে চারজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা সবাই নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়েছেন আর পাল্টা হামলা চালাতে ইসরায়েলের পরিকল্পনা কী, তা নিয়ে আর কোনো তথ্য দেননি। এদের মধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊধ্রতন কর্মকর্তাও আছেন।দেশটির এক কূটনীতিক বলেছেন, “হিসাব এমন, প্রতিক্রিয়া যেন সর্বাত্মক যুদ্ধের সূচনা না ঘটায়। এই মুহূর্তে এটি আমাদের পক্ষে যাবে না।”সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মাজদাল শামসের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এরপর তার দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসরায়েল রাষ্ট্র এটি উপেক্ষা করতে পারে না এবং করবে না। আমাদের প্রতিক্রিয়া আসছে আর তা কঠোর হবে।”
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলায় লিপ্ত আছে কিন্তু তারা উভয়েই সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।ইসরায়েল যেন লেবাননের রাজধানী বৈরুত বা দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত না হানে তার জন্য একটি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে আর যুক্তরাষ্ট্র এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত পাঁচ ব্যক্তি।
তারা রয়টার্সকে জানান, দ্রুত গতিতে চালানো এই কূটনৈতিক তৎপরতার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে হিজবুল্লাহর প্রধান শক্তি কেন্দ্র দক্ষিণ বৈরুতের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অথবা লেবাননের বিমানবন্দর ও সেতুর মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে হামলা চালানো থেকে ইসরায়েলকে বিরত রাখা।কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে সীমান্তে নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা পাল্টাপাল্টি হামলা শনিবারের ঘটনার পর বিস্তৃত একটি যুদ্ধের রূপ নিতে পারে, এমন আশঙ্কায় উদ্বেগ ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
সোমবার দক্ষিণ লেবাননে ড্রোন হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর দুই যোদ্ধাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এ হামলায় একটি শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন। শনিবারের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে হতাহতের প্রথম ঘটনা এটি।ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সোমবার একটি ড্রোন লেবাননের সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলের গ্যালিলি এলাকায় প্রবেশের পর তাদের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী সেটি ভূপাতিত করেছে।