Monday, March 17, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদনেটো সম্মেলন: রাশিয়াকে প্রতিরোধ ও ইউক্রেইনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ

নেটো সম্মেলন: রাশিয়াকে প্রতিরোধ ও ইউক্রেইনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১১ জুলাই: ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নেটো সামরিক জোটের তিন দিনের সম্মেলনের প্রথম দুই দিনে রাশিয়াকে প্রতিরোধ ও ইউক্রেইনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ঘোষণা করেছে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৬ সালে জার্মানিতে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন শুরু করবে।রাশিয়া ইউরোপের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেছে নেটো। রাশিয়ার এই হুমকি মোকাবেলায় জার্মানিতে দীর্ঘ পাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত বড় ধরনের একটি পদক্ষেপ বলে মনে করছে তারা।

রয়টার্স জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে স্নায়ু যুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের কোনো দেশে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র যা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা।যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, বিভিন্ন পর্বে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ইউরোপে বড় পরিসরে এসএম-৬, টমাহক ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করার প্রস্তুতি চলছে।১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত মধ্যবর্তী পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির আওতায় এই পদক্ষেপটি নিষিদ্ধ হয়ে যেত, কিন্তু ২০১৯ সালে চুক্তিটি ভেস্তে যায়।

বুধবার নেটো মিত্রদের প্রকাশ করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “আমরা মিত্রদের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে হামলার সম্ভাবনা বাদ দিতে পারি না।”সম্মেলনে নেটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলো ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি আরও সমর্থন যুগিয়ে ইউক্রেইনকে আরও সামরিক সহায়তা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, নেটোর সদস্য দেশগুলো আগামী বছরের মধ্যে ইউক্রেইনকে অন্তত চার হাজার কোটি ইউরোর সমমূল্যের সামরিক সহায়তা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

তবে নেটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্তোলতেনবার্গ বহু বছর ধরে ইউক্রেইনকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি নেটোর সদস্যরা।চীনের বিষয়ে নেটোর আগের ভাষ্য এবার আরও জোরালো হয়েছে। সম্মেলনের নথিতে ইউক্রেইনে রাশিয়ার যুদ্ধে প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে চীনকে ‘নির্ণায়ক সক্ষমকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বেইজিং ইউরো-আটলান্টিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করে চলেছে বলে এতে মন্তব্য করা হয়েছে।

স্তোলতেনবার্গ সাংবাদিকদের জানান, এই প্রথমবারের মতো নেটোর ৩২ সদস্য রাষ্ট্রের সবাই যৌথভাবে চীনকে রাশিয়ার যুদ্ধের নির্ণায়ক সক্ষমকারী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।তিনি জানান, নেটো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সংগঠন না, এটি এর মিত্র রাষ্ট্রগুলোর যার যার সিদ্ধোন্তের ব্যাপার।“কিন্তু আমার মনে হয়, নেটোর এই সম্মেলনে থেকে আমরা যে বার্তা দিয়েছি তা খুব পরিষ্কার,” বলেছেন তিনি।

ওই প্রজ্ঞাপনে চীনকে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টায় রাজনৈতিক ও বস্তুগত সমর্থন দেওয়া বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। চীনের মহাকাশ সক্ষমতা ও তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডারের দ্রুত সম্প্রসারণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। আর সবশেষে বেইজিংকে কৌশলগত ঝুঁকি হ্রাস আলোচনায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।বুধবার রাতে বাইডেন তার নেটো মিত্র ও অংশীদারদের হোয়াইট হাউজে এক নৈশভোজে আপ্যায়িত করেন। নেটো জোটকে ‘বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জোট’ বলে অভিহিত করেছেন বাইডেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য