স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৫ নভেম্বর: রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত খেরসনের কাছাকাছি চলে আসছে ইউক্রেইনীয় বাহিনী। এই নগরী পুনর্দখল করতে পারলে যুদ্ধে বিরাট জয় পাবে তারা। তবে রুশ বাহিনী সেখানে পাল্টা আক্রমণের মুখে বেকায়দায় থাকলেও সহসাই বিদায় নেবে বলে মনে করছে না ইউক্রেইনীয় সেনারা। এ পরিস্থিতিতে খেরসনে তাদের জন্য ঘনিয়ে আসছে একটি প্রবল রক্তক্ষয়ী লড়াই।রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও এরই মধ্যে ইউক্রেইনের দক্ষিণের এই খেরসন অঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। খেরসনের দিকে ইউক্রেইনীয় বাহিনী ক্রমেই এগিয়ে যেতে থাকায় পুতিন বলেছেন, হামলা থেকে বাঁচতে বিপজ্জনক এলাকাগুলো থেকে মানুষজনের চলে যাওয়া উচিত।খেরসন থেকে এরই মধ্যে অন্তত ৭০ হাজার মানুষ চলে গেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে সামরিক অভিযানের শুরুর দিকেই অঞ্চলটি দখল করেছিল রাশিয়া।পরে তারা নিজ ভূখন্ডের সঙ্গে খেরসনকে যুক্তকরে নেওয়ার ঘোষণাও দয়েছে। ইউক্রইন এবং রাশিয়া উভয়ের জন্যই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নগরী খেরসন।
এ নগরী ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখল করে নেওয়া ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে যাওয়ার প্রবেশদ্বার।সম্প্রতি ইউক্রেইনীয় বাহিনী ধীরে ধীরে এই নগরীর উপকণ্ঠে ভূখন্ড পুনর্দখল করেছে। তাদের আক্রমণের মুখে রুশ বাহিনী প্রতিরোধ লড়াই করে টিকে থাকার চেষ্টা নেওয়ার পর গতমাসের মাঝামাঝিতে বেসামরিক লোকজনদেরকে প্রথম নগরীটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।এবার মস্কোর রেড স্কয়ারে শুক্রবার এক বক্তব্যে খেরসন পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, “গোলাবর্ষণ ও হামলার ঝুঁকিতে থাকা মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়া উচিত।” খেরসন ঘিরে নিপ্রো নদীর আশপাশের গ্রাম ও শহরগুলো থেকে বাসিন্দাদেরকে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে সরিয়ে নিয়েছে মস্কো সমর্থিত প্রশাসন।ওদিকে, খেরসন পুনরুদ্ধারে ছক কষেই এগুচ্ছে ইউক্রেইন। লড়াইয়ের জন্য সেনাদের প্রস্তুতিও চলছে। তারা খেরসন থেকে রুশ বাহিনীকে হটিয়ে দিতে পারবে বলে আশাবাদী। ইউক্রেইনের পদাতিক বাহিনীর সেনা কামান্ডার ওলেহ ট্রেঞ্চ খুঁড়তে খুঁড়তে বলেন, আসছে শীতের মধ্যেই রুশ শত্রুদের হটানো যাবে বলে তার আস্থা আছে।তবে তাদেরকে হটিয়ে দেওয়াটা এত সহজ হবে না বলেই মনে করেন পশ্চিম খেরসনে যুদ্ধের সম্মুখভাগে থাকা এই ইউক্রইনীয় কমান্ডার। কারণ, তিনি কিংবা তার বাহিনীর কেউই মনে করেন না যে, রুশ বাহিনী সহসা কিংবা চুপিসারে খেরসন ছেড়ে চলে যাবে, এমনকী ইউক্রেইনীয় বাহিনীকে সেখানে সহজেই ঢুকতে দেবে।এ থেকেই আঁচ করা যায়, আসছে সপ্তাহে খেরসনে ঘনিয়ে আসছে একটি তুমুল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অপচ্ছায়া। ওলেহ বলেন, “তারা (রুশ বাহিনী) লড়াই চালিয়ে যাবে। তারা তাদের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করবে যতক্ষণ তাদের সেটি করার সক্ষমতা থাকবে। লড়াইটা হবে তুমুল।”খেরসনে রাশিয়া-সমর্থিত প্রশাসনের উপপ্রধান কিরিল স্ট্রেমোউসভও জোর লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, রুশ বাহিনী লড়ে যাবে বলে তিনি আশা করেন। রাশিয়ার আরটি টেলিভিশনে কিরিল বলেন, “আমরা খেরসন ছেড়ে দিলে তা হবে এক বড় ধরনের ধাক্কা।”