স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক ২৮ নভেম্বর : মৃতের সংখ্যা যে বাড়বে সে আশঙ্কা ছিলই। শুক্রবার সকালে হংকং প্রশাসনের তরফে যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, সাতটি বহুতল আবাসনে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৮ জন। পাশাপাশি তদন্তে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় ফায়ার অ্যালার্ম ঠিকমতো কাজ করেনি। যার জেরে আগুন লাগার পর বেরিয়ে আসার পর্যাপ্ত সময় পাননি আবাসনের বাসিন্দারা।
বুধবার রাতে ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল হংকং । আধুনিক শহরের অহঙ্কারে আঘাত হেনে গত তিন দশকে সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তাই পো জেলা শহরে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, একটি ৩২ তলা ভবনে সংস্কারের কাজ চলছিল। সেখান থেকে ছড়ানো আগুন ফুলকি থেকে বিপদ ঘটে। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশাপাশি থাকা সাতটি বহুতলে। এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে জানা গিয়েছিল মৃতের সংখ্যা ৪৪। প্রায় ৩০০ জন বাসিন্দার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। আবাসনগুলির ভিতরে তখনও বহু মানুষ আটকে ছিলেন বলে জানা যাচ্ছিল। যার জেরে মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছিল হংকয়ের দমকল কর্তৃপক্ষ। সেই আশঙ্কা সত্যি করে শুক্রবার দমকলের তরফে জানানো হল মৃত বেড়ে হয়েছে ১২৮।
পাশাপাশি ৭৯ জন মানুষ আহত হয়েছেন এই দুর্ঘটনায়। এখনও আবাসনের মধ্যে ১৬টি দেহ পড়ে রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। তদন্তকারীদের দাবি, দুর্ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১,০১৮টি ইউনিটকে নামানো হয়েছে উদ্ধার কাজে। বহুতল আবাসনের ঘরের জানালা ভেঙে ভেরতে ঢুকে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। মৃতদের পরিবারকে ও আহতদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। দুর্ঘটনার পর তদন্তকারীরা ৮টি ব্লকের ফায়ার অ্যালার্ম পরীক্ষা করেছিলেন। যেখানে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ অ্যালার্মই ঠিকমতো কাজ করছে না। ফলে অনুমান করা হচ্ছে আগুন যে লেগেছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য পাননি বাসিন্দারা। যার জেরেই প্রাণহানির ঘটনা এত বেশি।
উল্লেখ্য, বুধবার আগুন লাগার খবর পাওয়া মাত্র দমকলের ১২৮টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। হাজির হয় ৫৭টি অ্যাম্বুল্যান্স। ইতিমধ্যে ন’শোর বেশি মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়। উদ্ধারকাজের সময় দমকল কর্মীরও মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। উল্লেখ্য, দুর্ঘটনায় প্রথমে ‘৪ নম্বর অ্যালার্ম’ জারি হয়েছিল। পরিস্থিতি ক্রমে এমন গুরুতর হয়ে ওঠে যে ‘৫ নম্বর অ্যালার্ম’ জারি করা হয়। এটাই সেই দেশের সর্বোচ্চ বিপদ সংকেত। গত তিরিশ বছরের মধ্যে হংকংয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলেই জানা গিয়েছে।

