স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৯ জুলাই : কাকভোর হওয়ার আগে লেইক চৌমহনি বাজারের অস্থায়ী দোকানপাট ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল আগরতলা পুর নিগম কর্তৃপক্ষ। ভোর পাঁচটা ছয়টা নাগাদ দোকান খুলতে এসে দেখে সবকিছু শুনশান। যা দেখে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। বাজারটি পাঁচটা আধুনিক বাজার হিসেবে গড়ে তুলতে নিগম কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন আগেই উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাজারে একটি শেড ঘর নির্মাণ করা হয়। শেড ঘরে স্থায়ী ব্যবসায়ীদের জন্য কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়।
মোট ১২৫ থেকে ১৩০ জন ব্যবসায়ী স্থান পাবে শেড ঘরে। অথচ প্রতিদিন প্রায় সাত থেকে আট শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এই রাজন্য আমলের বাজারে বসে সংসার পরিচালনা করে আসছে। তাদের পূর্বপুরুষ এই বাজারে ব্যবসা করেছেন। এখন তারাও করছেন। কিন্তু উপর মহলের সাথে পরিচিতি কম থাকায় কেউ কেউ বাজারের স্থায়ী ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে পারেননি। তারা এখনো অস্থায়ী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত বাজারের মধ্যে। নিজের মত করে কেউ টিনের ছাউনি, আবার কেউ খালি আকাশের নিচে বসে শরীরের ঘাম জড়িয়ে বছরের পর বছর ব্যবসা করে গেছেন। গত কয়েকদিন আগে নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বাজার পরিদর্শনে গিয়ে শেড ঘরের কাজকর্মের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। তারপর শুক্রবার সকাল বেলা নিগম কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেয় টিনের ছাউনি খুলে নেওয়ার জন্য।
বিকালের মধ্যে অধিকাংশ ব্যবসায়ী টিনের ছাউনি খুলে নেয়। ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নেয় ছাতার নিচে বসে ব্যবসা করবেন। কিন্তু রাত পোহাতেই সবকিছু খালি ময়দানের মত হয়ে গেল। এমনটাই দাবি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। তাদের বক্তব্য, নিগম কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে অমানবিক আচরণ করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে নিজের মতো করে রাস্তার পাশে বসে জীবন সংগ্রাম করে আসছিল। কিন্তু তাদের এভাবে সরিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই মানতে পারছেন না। তাদের মধ্যে কেউ সবজি বিক্রেতা, কেউ মাংস বিক্রেতা আবার কেউ ফল ফুল বিক্রি করে। কিভাবে সংসার পরিচালনা করবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না। প্রশাসন থেকে অভিযান চালানোর আগে তাদের পরিবারের কথা একবার ভাবার প্রয়োজন ছিল। বিকল্প কোন জায়গায় তাদের ব্যবসা করার জন্য জমি দিয়ে তারপর এ ধরনের অভিযান করলে সমস্যা হতো না বলে দাবি করলেন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। নিগমের এ ধরনের ভূমিকায় অত্যন্ত হতাশাগ্রস্ত অস্থায়ী ব্যবসায়ী মহল।

