স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১ এপ্রিল : মতিনগর এবং জয়পুর এলাকার মানুষের সমস্যা নিয়ে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনে গেলেন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিত দল। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে ডেপুটেশন প্রদান করে প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী জানান, আমতলী থানাধীন সীমান্ত গ্রাম মতিনগরে শতাধিক পরিবার সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে বসবাস করে আসছে। গত ২৭ শে মার্চ রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের সেকেরকোর্ট শাখার কর্মীরা উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়, কাটা তারের বেড়ার ওপারে বসবাসকারী নাগরিকদের বক্তব্য নিয়ম মেনে যদি সীমান্তে জিরো লাইন থেকে ১৫০ মিটার দূরত্বে বেড়া নির্মাণ করা হতো তাহলে তাদের কোন ক্ষতি হতো না। কিন্তু বেড়া নির্মাণ হয়েছে জিরো লাইন থেকে ৫০০-৭০০ মিটার দূরত্বে, এতে তাদের জমি সহ একটি কবরস্থান, একটি মসজিদ কাঁটাতারের ওপারে পড়ে গেছে।
তা সত্ত্বেও সরকার যদি এপারে তাদের জায়গা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে না। রাজধানীর জয়পুর সীমান্তে কুড়িটি সংখ্যালঘু পরিবারের বিদ্যুৎ ছিন্ন করে দিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়োগ। এই দুটি ঘটনায় চূড়ান্তভাবে মানবাধিকার লংঘন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ আধুনিক জীবনযাত্রার একটা অন্যতম প্রয়োজনীয় বিষয় অথচ বিনা নোটিশে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনা এসব বিবেচনায় না রেখে বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থাকা সত্ত্বেও মতি নগরে ও জয়পুরে সংখ্যালঘু পরিবারগুলির বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়ার ঘটনা বিদ্যুৎ নিগম ও রাজ্য সরকারের তুঘলকি কাজ কর্মেরই একটা অংশ। প্রদেশ কংগ্রেস রাজ্য সরকারের এবং বিদ্যুৎ নিগমের এই সকল ঘৃণ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন জানিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানব অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলী বন্ধে রাজ্য সরকার যাতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং মতি নগর ও জয়পুর সীমান্তে বসবাসকারী পরিবারগুলির বিদ্যুৎ সংযোগ জরুরি ভিত্তিতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া সহ তাদের সমস্যাগুলো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার যাতে জরুরি ভিত্তিত উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি আগে বলেন, ভারত – বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের একটা অংশ বৈধ নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার ফলে বাড়িঘর, চাষের জমি, বেড়ার ওপরে পড়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকৃত নিয়মকানুন থাকা সত্ত্বেও যেমন কাঁটাতারের বেড়া চালু হওয়ার সময় প্রবেশদ্বার ব্যবহারের সুযোগ ছিল রাত ৮ টা পর্যন্ত, সম্প্রতি কোনো কারন ছাড়াই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর একটা অংশ বিকেল পাঁচটায় গেইট বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে সীমান্তে বসবাসকারীদের জীবিকা নির্বাহ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাকাটার ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়ছে। কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করার চেষ্টা করলে তাকেও পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত করে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।