স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ০৯ ডিসেম্বরঃ ভারতের সংবিধানের ৭৫তম বার্ষিকীতে সংসদে সংবিধান নিয়ে আলোচনা সভা। এখানেই বক্তব্য রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর লোকসভায় এই ইস্যুতে বিতর্ক সভায় যোগ দেবে শাসক ও বিরোধী শিবির। সূত্রের খবর, ১৪ ডিসেম্বর সেই বিতর্ক সভাতেই বক্তব্য রাখবেন মোদি। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি আগামী ১৭ ডিসেম্বর রাজ্যসভাতে এই বিষয়ের উপর বক্তব্য রাখবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু আগেই জানিয়েছিলেন, আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর লোকসভায় এবং ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় এনিয়ে বিতর্কের আয়োজন করা হয়েছে। এই ইস্যুতে সংসদের দুই কক্ষে শাসক শিবিরকে আক্রমণ শানাতে মুখিয়ে রয়েছে বিরোধী শিবির। এরই মাঝে খবর, এই আলোচনা সভায় অংশ নিতে চলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন তো বটেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশের একাধিক বিধানসভা নির্বাচনে সংবিধান ইস্যুকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছে কংগ্রেস। অভিযোগ তোলা হয়েছে, ‘বিজেপি শাসনে সংবিধান বদলের ষড়যন্ত্র চলছে।’ এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রিজিজুর এক মন্তব্যে। তিনি বলেছিলেন, “সংবিধান একটি পুস্তক। এদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদেরও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে। সংবিধানেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন লোক বিভিন্ন মতামত রেখেছেন। সংবিধানে সংশোধনও করা হয়েছে। সকলেই জানে সংবিধান কোনও স্থায়ী তথ্য নয়। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন আসতে পারে। যদিও মূল প্রস্তাবনায় আমরা বদল আনতে পারি না। তবে গণতন্ত্রে কিছুই স্থায়ী নয়।” এর পরই জল্পনা শুরু হয় সংবিধান বদলের ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি।
বিতর্ক শুধু এইটুকুতে থেমে থাকেনি। ২০২৩ সালে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের সময় সাংসদের ব্যাগে সংবিধানের আদি প্রতিলিপি দেওয়া হয়। যেখানে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দদুটি ছিল না। সেই ঘটনায় বিতর্ক চরম আকার নেয়। বিজেপি সরকারের আমলে সংবিধান বদলের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। যদিও হাত শিবিরের এহেন দাবি বার বার উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে। খোদ অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, “গত ১০ বছর আমরা ক্ষমতায় রয়েছি। সংবিধান বদল করার উদ্দেশ্য থাকলে আমরা তা করতে পারতাম। কিন্তু তা করিনি।” সংবিধান সংক্রান্ত এক মামলায় শীর্ষ আদালতও জানিয়ে দেয় ধর্ম ‘নিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া যাবে না। সেই বিতর্কের মাঝেই এবার সংবিধান নিয়ে সংসদের বিতর্ক সভায় প্রধানমন্ত্রী কী বার্তা দেন সেদিকে নজর গোটা দেশের।