স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ অক্টোবর : মঙ্গলবার সপ্তমী। এদিন সপ্তমীর আলোড়িত ভোরেই নদীঘাটে বা জলাশয়ে নবপত্রিকা স্নান বা কলাবউ স্নান সমাপন হয়। যা দুর্গাপুজোর এক অপরিহার্য অঙ্গ। আপাতদৃষ্টিতে দেখে মনে হয়, যেন একটি কলাগাছকে কাঁধে করে স্নান করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে বাজতে থাকে ঢাক। আর সপ্তমীর ভোরের এই ঢাকবাদ্যই পুজোর সুরটাকে বেঁধে দেয়। অন্ধকার দূরীভূত হয়ে আলোর রেখা দেখা দিচ্ছে আশ্বিনের স্নিগ্ধ দিগন্তে। কলাবউকে সাধারণত গণেশের বউ বলা হয়। তা কিন্তু নয়।
কলাবউ দুর্গারই এক রূপ, সেই হিসেবে কলাবউ গণেশের মাতৃস্থানীয়া। কলাবউ আসলে ন’টি উদ্ভিদের এক গুচ্ছ। এতে থাকে কলাগাছ, কচু বা কালকচু গাছ, হলুদ গাছ, জয়ন্তী গাছ, বেল, ডালিম, অশোক, মানকচুগাছ, ধানগাছ। এই ন’টি উদ্ভিদ শ্বেত অপরাজিতা লতা ও লাল সুতো দিয়ে পরস্পর বাঁধা থাকে। কলাগাছটিই আকারে-আকৃতিতে বড় থাকে বলে পুরো ব্যাপারটিকে ‘কলাবউ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, প্রতিটি উদ্ভিদই বিভিন্ন দেবীর প্রতীক। এদিকে চিরাচরিত প্রথা মেনে রাজধানীর দুর্গা বারিতে শুরু হয়েছে দুর্গা পূজা। সকালে কলাবউ স্নানের মাধ্যমে সপ্তমী পূজা শুরু হয়। এরপর হয় হোম। দুপুর ১২ টায় মাকে অন্ন ভোগ দেওয়া হয়। এই পুজোয় দুর্গা বাড়িতে পূর্ণার্থীরা আসছেন। চরনামৃত ও আশীর্বাদ নিয়ে যাচ্ছেন। করোনার কারনে অঞ্জলি প্রদানের সুবিধা এই বছরও নেই। সন্ধ্যায় হয় আরতী।
সরকারী নিয়ম নিতি মেনে পশ্চিম জেলা প্রশাসনের নির্দেশ দুর্গা বাড়িতে পূজো হচ্ছে বলে জানান দুর্গা বাড়ির পুরোহিত। বলী প্রথা বন্ধের নির্দেশ রয়েছে। তাই পুজোয় কোন বলী হবে না বলে জানান তিনি। এদিন বহু পূর্ণার্থী নিয়ম মেনে দুর্গা বাড়িতে প্রবেশ করেন। পুজোয় আশীর্বাদ নিয়ে যান। দুর্গা বাড়িতে ভীর এড়াতে জাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছা সেবক রয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে। সমস্ত বিধি নিষেধ মেনে চিরাচরিত ভাবে পূজা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী দুর্গা বাড়িতে।