স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৮ মার্চ : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল জয়ের জন্য ভ্লাদিমির পুতিনকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার এক্স-বার্তায় মোদী লিখেছেন, ‘‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভ্লাদিমির পুতিনকে শুভেচ্ছা জানাই। আগামী বছরগুলিতে ভারত-রাশিয়া মৈত্রী এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ।’’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৮৭ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে ষষ্ঠ বারের জন্য ক্ষমতায় বসতে চলেছেন পুতিন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, রুশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী নিকোলাই খারিতনভ পেয়েছেন মাত্র ৪ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট। গত আড়াই দশকে কার্যত বিরোধীহীন হয়ে পড়া রুশ রাজনীতিতে পুতিন ‘অপ্রতিরোধ্য’ বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ ভোটের আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। ফলাফলে তা মিলে গিয়েছে।
ক্রেমলিনের তরফে ইঙ্গিত ছিল, আগের চারটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তুলনায় পুতিনের ভোটবৃদ্ধি নিশ্চিত। মিলে গিয়েছে তা-ও। এর আগে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ভোটে পুতিন সাড়ে ৭৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলেও সেই জোর করে ব্যালট বাক্স জাল ভোট ভর্তি করা, জালিয়াতি এবং ভোটে বাধাদানের অভিযোগ উঠেছিল পুতিন-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ বারও নানা অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় পুতিন ‘কথা দিয়েছিলেন’, ২০২৪ সালের পরে আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন না। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই সিদ্ধান্ত বদলেছেন তিনি। গত ২৩ বছর ধরে রাশিয়ায় কার্যত দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়ে আছেন পুতিন। ২০০০ সালের মে মাস থেকে ২০০৮ সালের মে পর্যন্ত উপর্যুপরি দু’টি ভোটে জিতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন তিনি। তৎকালীন রুশ আইন অনুযায়ী দু’বারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকা যেত না। তাই অনুগত দিমিত্রি মেদভেদেভকে প্রেসিডেন্ট করে নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন পুতিন।
এর পরে ২০১২ সালে দ্বিতীয় দফায় (তৃতীয় নির্বাচন জিতে) ছ’বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হন পুতিন। পুনর্নির্বাচিত হন ২০১৮-য়। টানা দু’বারের বেশি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্যই ২০২১ সালেই আইন পরিবর্তন করেছিলেন সোভিয়েত জমানায় গুপ্তচর সংস্থা কেজিবির প্রাক্তন প্রধান পুতিন। পঞ্চম বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে ২০৩০ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন তিনি। অর্থাৎ, তাঁর সামনে এখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই নেতার রেকর্ড ভাঙা সময়ের অপেক্ষা। এর আগে কমিউনিস্ট জমানায়, টানা ২৪ বছর ক্রেমলিনে ক্ষমতায় ছিলেন জোসেফ স্তালিন এবং লিওনিদ ব্রেজনেভ।