স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ আগস্ট : মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘুরানোর ঘটনা শীর্ষ আদালত পর্যন্ত পৌঁছেছিল। এবং এর তদন্তভার গেছে সিবিআই -এর হাতে। মহিলাদের সাথে এই ঘটনা ভাতৃ দাঙ্গা হলেও গোটা দেশ এর নিন্দা বর্ষণ করেছে। এবং এই ঘটনার নিন্দায় শামিল হয়েছিল গোটা দেশের সাথে ত্রিপুরার বিভিন্ন নারী সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই ঘটনায় রেশ কাঁটতে না কাঁটতে শাসকদলের মেম্বার দ্বারা কলঙ্কিত হল ত্রিপুরা। ছেলে ‘ চোর বলে মাকে বিবস্ত্র করে পেটায় মেম্বার শুকলাল দাসের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী।
যা মহিলার সাথে মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রবিবার রাতে শানমুড়া এলাকায় ছেলে চুরি করার দায়ে দুর্বৃত্তরা অভিযুক্ত ছেলের মার সাথে এই নিন্দা জনক ঘটনা করল। এলাকার এক মহিলার নাবালক ছেলে সহ তিন নাবালক মিলে নেশা করার জন্য এলাকার একটি দোকান থেকে টাকা চুরি করে। অবশেষে এলাকাবাসী বিষয়টি তদন্ত করে তিন নাবালককে এলাকাতেই ধরে ফেলে। পরবর্তী সময় দুই নাবালককে ছেড়ে দেয় এলাকাবাসী। এবং এক নাবালক ও তার মাকে রবিবার রাতে স্থানীয় মেম্বার শুকলাল দাস বিচার সভায় উপস্থিত থাকার জন্য বলেন। যথারীতি বিচার সভায় উপস্থিত হয় নাবালক ছেলে এবং তার মা। তখন বিচার সভায় দাবি করা হয় নাবালকের মার কাছে চুরি যাওয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য। এতে নাবালকের মা রাজি হয়ে যায় ছেলের চুরি করা সব টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। কিন্তু এলাকার যুবকরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নাবালক ছেলেটিকে বেধরক মারধর করে। মাথা ন্যাড়া করে দেয়। এতে প্রতিবাদ জানান নাবালকের মা। পরে এলাকার যুবকরা নাবালকের মাকেও বিবস্ত্র করে কিছু ধাওয়া করে দুর্বৃত্তরা। তারপর বেধড়ক মারধর করে বলে জানান নাবালকের মা। আক্রান্ত মহিলা আরো জানান মারধরের পাশাপাশি তাকে এবং তার ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশ।
তারপর মা ছেলেকে উদ্ধার করে জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য বলে জানান আক্রান্ত মহিলা। তবে এই ঘটনা যে মণিপুরের নারী সংক্রান্ত ঘটনার কালো ছায়া ত্রিপুরায় পড়েনি সেটা বলা যায় না। নাবালক চুরি করার দায়ে একজন নারীর ইজ্জত যে লুণ্ঠন হবে তা হয়তো বর্তমান সমাজ কখনো ভাবতেও পারেনি। তবে এখন পর্যন্ত ঘটনাটি ধাপাচাপা দেওয়ার জন্য একটা মহল কাজ করে চলেছে। কিন্তু এলাকার শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বলছে যদি মহিলার ছেলে চুরি করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। এবং মনিপুরের ঘটনার অনুরূপ যে ঘটনাকে ত্রিপুরার রাজধানীর বুকে সংঘটিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। এদিকে মা ও ছেলে দুজনেই জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই মহিলা সংক্রান্ত ঘটনার পর পুলিশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন মামলা গ্রহণ করেছে কিনা এবং কাউকে গ্রেফতার করেছে কিনা জানা নেই। কিন্তু মনিপুরে বিবস্ত্র করে দুই মহিলাকে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনাকে যে একদিন ত্রিপুরা পিছে ফেলে দেবে, তা সভ্য সমাজের জানা ছিল না।