স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ২৪ মার্চ : উত্তর ত্রিপুরা জেলার চুরাইবাড়ি থানাধীন দক্ষিণ ফুলবাড়ী গ্রামে পনের জন্য দু’পক্ষের মারামারিতে গুরুতর আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বিগত বারো বছর পূর্বে ফুলবাড়ী গ্রামের ছয় নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল মন্নানের মেয়ে সুলতানা বেগমের সাথে ইচাইলালছড়া গ্ৰামের বাসিন্দা জিয়াউর রহমানের বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে এক লক্ষ টাকা এনে দেওয়ার জন্য সুলতানার উপর চলে অমানবিক অত্যাচার।
তখন সুলতানা জানায় তার বাবা দিনমজুর। তাই এত টাকা তার পরিবার দিতে পারবে না। তখন থেকেই অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। বহুবার সালিশি সভা সহ থানায় মামলা গড়ালেও সুলতানার উপর অত্যাচার বন্ধ করেনি তার স্বামী সহ পরিবারের লোকজন। এতে করে বিবাহের বারো বছর কেটে গেলেও তার অত্যাচারের মাত্রা বিন্দুমাত্র কমেনি। গত ২১ মার্চ শুক্রবার বিকাল চারটা নাগাদ এই পণ প্রথাকে কেন্দ্র করে সুলতানার স্বামীর বাড়ির লোকজনেরা এসে সুলতানা সহ তার মা হেনা বেগম, বোন জামাই জাকির হোসেন ও অন্যান্য ব্যক্তিদের চরম মারপিট শুরু করে বলে অভিযোগ করে গৃহবধূ সুলতানা।
এতে গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকে তারা। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় চুরাইবাড়ি থানার পুলিশ ও প্রেমতলা দমকল কর্মীরা। দমকল কর্মীরা গুরুতর আহতদের প্রথমে কদমতলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতাল ধর্মনগরে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তাদের চিকিৎসা চলছে। এদিকে এই মারপিটের ফলে সুলতানার মার হাতের হাঁড় ভেঙ্গে যায়। তার বোন জামাইকেও লোহার রড ও দা দিয়ে আঘাত করলে সেও গুরুতর আহত হয়। সঙ্গে গর্ভবতী সুলতানাকেও চরম মারপিট করা হয় বলে জানায় সে। আহত জাকির হোসেনের বাড়ি অসমের কাঁটলতলীতে, সে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে তার শ্বশুরবাড়িতে এসে এই মারপিটের শিকার হয় বলে জানায় সে। এদিকে সুলতানার স্বামীর বাড়ির শামসুল হক, বদরুল হক, আলমাস, কামাল কাসিম, আব্দুল ওয়াহিদ, নেজাম উদ্দিন, সেলিম উদ্দিন ও আইনুল হকরা চরম মারপিট করে বলে অভিযোগ করে গৃহবধূ সুলতানার। গৃহবধূ আরো জানায়, তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে চুরাইবাড়ি ও কদমতলা থানায়। এর পূর্বেও বহুবার মানসিক অত্যাচার সহ মারধোর, এমনকি প্রাণে মারার হুমকিও দেয় অভিযুক্তরা বলে জানান গৃহবধূ সুলতানা। তার বাপের বাড়ির লোকজন প্রশাসনের দারস্থ হয়েও সুবিচার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন।