স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ১৪ ফেব্রুয়ারি : পাঁচ বছর চুপচাপ থেকে ভোটের সময় ২০ থেকে ২২ টি বিজেপির বিরোধী রাজনৈতিক দল চলো বিজেপি হাঁটাও স্লোগান তুলে ভোটের দুদিন আগে পর্যন্ত ঝগড়াঝাটি করে। এরপর ভোটের সময় এক দল অন্য দলের কর্মীরা ভোট দিয়েও সমর্থন করে না। তারপর ভোটের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর এক দল অন্য দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সমালোচনা করে। এভাবে বিজেপিকে হাঁটানো যাবে না। সারা দেশের বুকে জন বিরোধী ও ফ্যাসিস্ট সুলভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পাথর চাপা হয়ে বসবার চেষ্টা করা বিজেপি থেকে ভারত বর্ষকে উদ্ধার করা যাবে না এবং ত্রিপুরাকে মুক্ত করা যাবে না। বামপন্থী দলসমূহের ডাকে কর্পোরেট স্বার্থবাদী, জনবিরোধী কেন্দ্রীয় বাজেটের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাজধানীর শকুন্তলা রোড এলাকায় আয়োজিত গণঅবস্থান এই কথা বলেন পলিটব্যুরোর সদস্য তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
এদিন সিপিআইএম, সিপিআই, আরএসপি, এফবি, সিপিআইএমএল যৌথ উদ্যোগে গণ অবস্থান অনুষ্ঠিত হয়। গনবস্থানে বক্তব্য রেখে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বামপন্থী পাঁচটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় বাজেটের বিকল্প দাবি পার্লামেন্টে সরকার কর্ণপাত করছে না বলে চুপ বসে থাকবে সেটা কখনো হতে পারে না। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। কারণ মানুষের রোজগার নেই, ক্রয় ক্ষমতা নেই। বাজারে গিয়ে মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় করতে পারছে না। এ সময় কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন ভূমিকা নিলে চলবে না। কেন্দ্রের বাজেটে গন বন্টন ব্যবস্থা জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। কারণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে গণবন্টন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পরিবর্তে দিন দিন দুর্বল করার জন্য নানা কায়দা গ্রহণ করছে বর্তমান সরকার। তাই নিত্য প্রয়োজনীয় ১৫ টি সামগ্রী যাতে সরকার দায়িত্ব নিয়ে সস্তায় বিলি করে সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। বামফ্রন্টের পাঁচটি দলের অন্যতম দাবি হলো গত তিন থেকে চার বছর আগে যেসব স্কিম চালু হয়েছিল সেই স্কিম গুলি বর্তমানেও একই অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে মানুষের তেমন সহযোগিতা হচ্ছে না। স্কিমগুলির অর্থ বৃদ্ধি করার জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করার জন্য বিকল্প দাবি হিসেবে আজকে থেকে সারাদেশে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে আন্দোলন চলবে। তিনি আরো গত কয়েক বছরে লক্ষ্য করা গেছে আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোল ডিজেলের দাম হ্রাস পেলেও বিভিন্ন কর বসিয়ে দেশে পেট্রোল-ডিজেলের ওপর মূল্য বৃদ্ধির করে চলেছে সরকার।
এবং যার ফলে পরিবহন ব্যবস্থার উপর প্রভাব পড়ছে। পণ্য পরিবহনের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় সাধারণ মানুষের এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সরকারের এ ধরনের কার্যকলাপের বিরোধিতা করে লাগাতার আন্দোলন করে চলেছে বামফ্রন্টের বিভিন্ন সংগঠন। একইভাবে পার্লামেন্টের ভেতরে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অথচ পার্লামেন্টের বাইরে এমন কোনো বড়সড় আন্দোলন তাদের মধ্যে প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের উপর থেকে কেন্দ্র সরকারকে কর তথা সেস প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ এটা রাজ্যের সাথে কেন্দ্র সরকার ভাগাভাগি করছে না। তাহলে জনজীবন কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এ দাবি গুলি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে দেখার চেষ্টা করা হয় তাহলে ভুল হবে। এই সমস্যা গুলি নিয়ে ইতিমধ্যে যদি গণআন্দোলন গড়ে তোলা না যায় তাহলে সরকার জনগণের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবে। এমনটাই অভিমত ব্যক্ত করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। আয়োজিত গণ অবস্থানে পাঁচটি বামপন্থী সংগঠনের নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।