Tuesday, March 18, 2025
বাড়িরাজ্যজঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘিরে আতঙ্কে জুবুথুবু কাঞ্চনপুর, এ বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন...

জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘিরে আতঙ্কে জুবুথুবু কাঞ্চনপুর, এ বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, ধলাইজেলা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন পুলিশ সুপার

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ জানুয়ারি : রাজ্যে বাড়ছে জঙ্গি আনাগোনা। বিশ্বস্ত সূত্রে এমনটাই খবর। কাঞ্চনপুর ছয়ঘরপুর সীমান্ত দিয়ে জঙ্গিদের এই আনাগোনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রবেশ করেছে বহু জঙ্গি। ফলে কাঞ্চনপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম। গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর, পূর্ত দপ্তর এবং পানীয় জল সম্পদ দপ্তর -এর পক্ষ থেকে কাঞ্চনপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজকর্ম শুরু হয়েছিল। সূত্রে খবর সম্প্রতি উন্নয়নমূলক কাজে নিয়োজিত শ্রমিক এবং ঠিকাদারদের হাতে চাঁদা রশিদ ধরিয়ে দিয়েছেন জঙ্গি দল।

ফলে কাজকর্ম ছেড়ে এসেছে ঠিকাদার ও শ্রমিকরা। যার কারণে আনন্দ বাজার থেকে সাত নালা পর্যন্ত গত কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যা হতেই শুনশান হয়ে যায়। এমনকি কাঞ্চনপুর বাজার ছাড়াও কাঞ্চনপুর স্কুল রোডেও একই অবস্থা সন্ধ্যার পর থেকে সৃষ্টি হয়ে আছে। আতঙ্কে মানুষ বাড়ি ঘর থেকে বের হতে চাইছে না। আরো জানা যায়, কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা ছয়ঘরপুর দিয়ে অবাধে বেশ কয়েকজন বৈরী কাঞ্চনপুর মহকুমা প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি এলাকার শংকর চোর খোলা থানাধীন ভিকি নালা গ্রামে ত্রিপুরা থেকে কিছু যুবককে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে অস্ত্র। এখন তারা কাঞ্চনপুর মহকুমার দিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। কাঞ্চনপুর মহকুমা যেসব ঠিকাদারদের চাঁদার নোটিশ দিচ্ছে তারা ঠিকাদারদের হোয়াটসঅ্যাপেও ak-47 কাধে নিয়ে ছবি পাঠাচ্ছে। যা দেখে রীতিমত আতঙ্কিত ঠিকাদাররা। কাঞ্চনপুর মহকুমা জুড়ে এ ধরনের গুঞ্জন রীতিমতো ছড়িয়ে পড়ল সরকারের পক্ষ থেকে এর কোন ষ্পষ্টীকরণ দেওয়া হয়নি। কিন্তু সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তিনি বলেন, রাজ্যে জঙ্গি সমস্যা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সরকারের কাছে খবরা-খবর রয়েছে। যদি সরকারের কাছে খবর না থাকে তাহলে সেটা সরকারের দুর্বলতা। কারণ এই জঙ্গিরা বাইরে কোথা থেকে রাজ্যে আসছে এবং তাদের পেছনে কোন শক্তি রয়েছে সে বিষয়ে সরকারই সবচেয়ে ভালো জানবে।

পূর্বতন সরকারের এদিকে নজর ছিল বলেই জঙ্গীদের মূল জায়গায় আঘাত করার চেষ্টা করেছে। তৎকালীন সময়ে যেমন তাদের বিরুদ্ধে মতাদর্শের লড়াই করেছে এবং তাদের যুক্তিসংগত কিছু সমস্যা কিভাবে সমাধানের জন্য উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে এই জঙ্গিরা যে সীমান্ত দিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করত সেই সীমান্ত অত্যন্ত সুরক্ষিতভাবে বিএসএফ, সিআরপিএফ এবং টিএসআর -কে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য বলা হতো। এবং সেখানে জঙ্গিদের রুখতে নিরাপত্তা রক্ষীদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। এগুলি যদি সরকার সমাধানের জন্য ব্যবস্থা না নেয় তাহলে সমস্যা বাড়বে বলে অভিমত ব্যক্ত করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন জনগণ শান্তি ও সম্প্রীতি চায়। তারা সন্ত্রাস চায় না। তাই রাজ্য সরকারকে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। এদিকে এ বিষয় নিয়ে ধলাই জেলার পুলিশ সুপার মিহির লাল দাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ধলাই জেলায় জঙ্গি অনুপ্রবেশের কোন খবর এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসনের কাছে নেই। তারপরও পুলিশ সব সময় সতর্ক এবং সচেতন থাকছে। পাশাপাশি রুটিন মাফিক অপারেশন চালানো হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার। তিনি আরো জানিয়েছেন ধলাই জেলায় উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। জঙ্গিদের পক্ষ থেকে ব্যাঘাত ঘটানোর কোন খবর এখন পর্যন্ত নেই পুলিশের কাছে। তবে কাঞ্চনপুর নিয়ে চিন্তা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। সেখানে গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে এবং সরকারের কাছে কি তথ্য রয়েছে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন কিছুই জানা যায়নি। দ্রুত বিষয়টি সামনে আনার প্রয়োজন বলে মনে করছে কাঞ্চনপুর বাসী। কারণ মানুষ বাড়ির ঘর থেকে বের হলে আতঙ্কে ভুগছে পরিবারের লোকজন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য