স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৬ সেপ্টেম্বর : তুঘলুকি ফরমান জারি করার অভিযোগ খোয়াই জেলা হাসপাতালের মেডিকেল সুপার মৃদুল দাসের বিরুদ্ধে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্টদের নির্দেশ দিয়েছেন এখন থেকে সপ্তাহে বুধবার এবং শনিবার খোয়াই জেলা হাসপাতালে লোয়ার সেগমেন্ট সিজারিয়ান সেকশন করা হবে। অর্থাৎ গর্ভবতী মায়েদের সপ্তাহে দুদিন সিজার হবে। কিন্তু এখন যদি কোন সংকটাপন্ন গর্ভবতী মহিলাকে আগরতলায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হয় তখন কি করা হবে। এই ব্যাপারে কোন স্পষ্ট উল্লেখ নেই।
এরকমই এক অত্যন্ত গরিব গর্ভবতী মা এই ফরমান বের হওয়ার পর তার সিজার করা নিয়ে সমস্যায় পড়ে। এই বিষয়টি নিয়ে খোয়াই জেলা হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট অর্ঘমাল্য দেববর্মাকে প্রশ্ন করা হলে আরেক বিশিষ্ট ডাক্তার বিশ্বজিৎ দেববর্মাকে পাশে নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাফ জানান, খোয়াইয়ের সংকটাপন্ন মহিলাদের কথা মাথায় রেখে পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। এতে করে তাদের শাস্তিও হতে পারে। কিন্তু কিছু করার নেই।
গরিব অংশের মানুষ যাবে তো যাবে কোথায়। অনেকের পক্ষে আগরতলায় নিয়ে গিয়ে সিজার করানো সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে খুব আপদকালীন রোগীও আসে। তাদের বিষয় নিয়েও এখানে কোন উল্লেখ নেই বলে জানান স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অর্ঘ্যমাল্য দেববর্মা। এদিকে হাসপাতালে এক সংকটাপন্ন গর্ভবতী মহিলা জানান, চিকিৎসক তাকে কোন এক অজ্ঞাত কারণে জিবি হাসপাতালে রেফার করে দিয়েছেন। কিন্তু কেন তাকে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে সে বিষয়ে বুঝে উঠতে পারছেন না। হাসপাতালের মেডিকেল সুপার মৃদুল দাসকে এ ধরনের ফর্মান জারি করার অনুমতি কে দিয়েছে সেটা জানা নেই। প্রশ্ন হল তিনি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক হয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্তে কিভাবে সহমত পোষণ করলেন। কোন একজন সঙ্কটাপন্ন গর্ভবতী মহিলাকে যদি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাহলে কিভাবে পরিষেবা দেওয়া হবে? সময়ে মধ্যে যদি ডেলিভারি না হয় তাহলে মৃত্যু হতে পারে একজন গর্ভবতী মহিলার। সুতরাং এ ধরনের নির্দেশিকা জেলা বাসীকে চিন্তায় ফেলেছে। এবং সবার ক্ষেত্রে সম্ভব নয় আগরতলা এসে ডেলিভারির খরচ বহন করার। যেখানে রাজ্য সরকার চিকিৎসা হাব গড়ে তোলার কথা বলছে সেখানে এ ধরনের ফরমান কোন ভাবেই জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয় নয়। এতে বহু গর্ভবতী মহিলার জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে। রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা বিভিন্ন সময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললেন কিভাবে বিভিন্ন মহকুমা ও জেলা হাসপাতাল থেকে জিবি হাসপাতালে রেফার করা রোগীর সংখ্যা কমানো যায় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাহলে খোয়াই জেলা হাসপাতালের এম এস -র নয়া নির্দেশিকা কি এর অন্যতম উদাহরণ?