স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ জানুয়ারি :আগামী ৬ ও ৭ জানুয়ারি ত্রিপুরা কর্মচারী সমন্বয় কমিটি -র চতুর্দশ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগরতলা টাউন হলে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে মূল আহ্বান হল- ‘হৃত বা লুষ্ঠিত অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই তীব্র করা। সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সম্প্রীতির দুর্গ গড়ে তোলা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মেলার মাঠ স্থিত ত্রিপুরা কর্মচারী সমন্বয় কমিটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বল।
তিনি বলেন, ৬ জানুয়ারি সকাল ১১ টায় আগরতলা টাউন হলের সামনে শুরু হবে প্রকাশ্য সমাবেশ। এই সমাবেশে ত্রিপুরা কর্মচারী সমন্বয় কমিটি -র সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সারা ভারত রাজ্য সরকারী কর্মচারী মহাসংঘের সাধারণ সম্পাদক এ. শ্রী কুমার এবং সারা ভারত রাজ্য সরকারী কর্মচারী মহাসংঘের সহ সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, গত ২৮-৩০ ডিসেম্বর সল্ট লেক, কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সারা ভারত রাজ্য সরকারী কর্মচারী মহাসংঘের কাউন্সিল সভা। ২৩ টি রাজ্য থেকে ৬০০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ৭৩ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেছেন। এতে সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যগুলির বর্তমান পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে। ব্যতিক্রমী কেরল ছাড়া সর্বত্রই নানা সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ জনগণ সহ শিক্ষক-কর্মচারী সমাজ। তাই সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারী, রেলওয়ে, ব্যাঙ্ক, বীমা ও প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মচারী সহ অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করে ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম দিকে দেশব্যাপী ধর্মঘট সংগঠিত করার বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, দেশ ও রাজ্যের সরকার সাধারণ শ্রমজীবী অংশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বার্থ রক্ষাকারী আইনগত অধিকার, কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য লাভের অধিকার, শিক্ষক-কর্মচারীদের ডিফাইন্ড বেনিফিট পেনশন সিস্টেম অনুযায়ী পেনশন পাওয়ার অধিকার, জনজাতি অংশের মানুষের বনের অধিকার, স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের অধিকার, বেকারদের নিয়মিত পদে চাকুরির অধিকার এবং সম কাজে সম মজুরির অধিকার, ব্যক্তিত্ব বিকাশের অধিকার প্রভৃতি। তিনি আরো বলেন, রাজ্যেও অসংখ্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি-আইপিএফটি -র নেতৃত্বাধীন সরকার। প্রায় ৬ বছরের শাসনে রাজ্যের অন্যান্য অংশের মানুষের মত শিক্ষক-কর্মচারীরাও প্রতারিত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় সপ্তম বেতন কমিশনের নামে ফিক্সেশন ইনডেক্স সামান্য পরিমাণ অর্থাৎ ০.০৯ শতাংশ থেকে ০.৩২ শতাংশ বৃদ্ধি করা ছাড়া আর কিছুই করেনি। বছরে ২ কিস্তি ডি.এ প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বকেয়া ডি.এ এবং ডি.আর পৌঁছেছে ২৬ শতাংশে। এমনকি বিভিন্ন দপ্তরে শূন্যপদ অবলুপ্ত করা হচ্ছে। ফায়ার ব্রিগেড দপ্তরের কর্মচারীদের সংগঠন করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সারা রাজ্যে ত্রিপুরা কর্মচারী সমন্বয় কমিটি কার্যালয় জবর-দখল, লুটপাট কিংবা অগ্নি সংযোগ করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। কোথাও বা সংগঠনের অফিসে সভা করতে গিয়ে নেতৃত্বদের দৈহিকভাবে আক্রান্ত হয়ে মামলা করা হলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের নেত্রী মহুয়া রায় সহ অন্যান্য উপস্থিত ছিলেন।