গণ্ডাছড়া, ৫ ডিসেম্বর (হি.স.) : ধলাই জেলার গণ্ডাছড়া মহকুমার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দরজায় তালা ঝোলালন সংশ্লিষ্ট এলাকার বহু শিল্পী এবং পাওনাদার ব্যবসায়ীরা। ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে হয়েছে পুলিশ এবং টিএসআর বাহিনীকে। শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে ডিসিএম ছুটে এসে কোনওরকমে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সাধারণ মানুষের বক্তব্য, বর্তমান সরকারের জমানায় শেষ পর্যন্ত শিল্পীদের সঙ্গে শিল্পীদের অফিসের এহেন আচরণ? শিল্পী এবং ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকা দেনা রেখে কেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গণ্ডাছড়া মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কর্মকর্তা। এই প্রশ্নকে সামনে রেখে এবং ব্যবসায়ী সহ শিল্পীদের পাওনা টাকা আদায়ের লক্ষ্যে মঙ্গলবার গণ্ডাছড়া মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দরজায় তালা ঝোলালেন পাওনাদাররা। এ ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসের ১৮ তারিখ থেকে গোটা দেশে এক কর্মসূচি পালনের ডাক দেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতা দিবসের প্রাকলগ্নে গোটা দেশের সীমান্ত–লাগোয়া ছোট ছোট গ্রামগুলিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মবলিদানের ইতিহাস ধরে তুলে ধরার জন্য একটি অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় সীমান্ত গ্রাম–ক্রান্তি বীরো কা নাম। সারা দেশের সাথে কর্মসূচি হাতে নেয় ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের নির্দেশে প্রতিটি মহকুমায় শুরু হয় সীমান্ত গ্রাম – ক্রান্তি বীরো কা নাম।
অন্যান্য মহকুমার মতো ধলাই জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অধিকর্তা চন্দন সরকারের নির্দেশে গণ্ডাছড়া মহকুমার অন্তর্গত রইস্যাবাড়ি ব্লকের সীমান্ত–লাগোয়া পূর্ব পোতাছড়া এবং পশ্চিম পোতাছড়া বিদ্যালয়ে পৃথক পৃথক ভাবে সাতদিনের ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া ডুম্বুরনগর ব্লকের সীমান্ত লাগোয়া ভগীরথপাড়া বিদ্যালয়েও অনুরূপ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ওই সব অনুষ্ঠান করতে গিয়ে প্রায় দু লক্ষাধিক টাকা দেনা করতে হয় গণ্ডাছড়া তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের এসআইও মোহাম্মদ ফকর উদ্দিনকে। কিন্তু ফকর উদ্দিন লক্ষ লক্ষ টাকা দেনা রেখে গত পাঁচ মাস যাবৎ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অফিসে এসেও তাঁর দেখা মিলছে না। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার শিল্পী এবং পাওনাদার ব্যবসায়ীরা।
ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আজ মঙ্গলবার। এদিন গণ্ডাছড়া তথ্য ও সংস্কৃতি অফিসের ভেতর এসআইও সহ মোট পাঁচ জনকে আটকে রেখে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন সংশ্লিষ্ট এলাকার শিল্পী এবং ব্যবসায়ীরা। ঘটনার খবর পেয়ে তথ্যও সংস্কৃতি অফিসে ছুটে যায় গণ্ডাছড়া থানার সাব -ইন্সপেক্টর কাজল দেবনাথের নেতৃত্বে পুলিশ এবং টিএসআর বাহিনী।
অবস্থা বেগতিক বুঝে বেলা দুটায় ঘটনাস্থলে হাজির হন ডিসিএম অনিন্দ্য চক্রবর্তী। আগামী দুদিনের মধ্যে সকলের প্রাপ্য বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলে ডিসিএম অনিন্দ্য চক্রবর্তীর প্রতিশ্রুতিমূলে তালামুক্ত করে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে গোটা এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।