স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ অক্টোবর : আবারো খবরের শীর্ষস্থান দখল করল রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল। অভিযোগ সঙ্কটাপন্ন রোগীকে মেয়াদ উত্তীর্ণ রক্ত দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে জিবি হাসপাতালে। জানা যায় নলছড় এলাকা থেকে দুর্ঘটনায় গুরুতর ভাবে আহত হওয়া শিল্পী ভৌমিক নামে এক মহিলাকে জিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকরা রোগীর পরিবারকে রক্তের ব্যবস্থা করার জন্য বলেন। সেই মোতাবেক রোগীর পরিবার জিবি ব্লাড ব্যাঙ্কে ডোনারের ব্যবস্থা করে দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী এক ইউনিট রক্তের ব্যবস্থা করেন। রোগীর পরিবারের লোকজন ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে এক ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করে চিকিৎসকের নিকট জমা দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক নার্স রোগীকে রক্ত দিতে শুরু করেন। আচমকা একজনের নজরে পরে যে রক্ত রোগীকে দেওয়া হচ্ছে, সেই রক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ। সাথে সাথে এই বিষয়ে নার্সকে জানানো হয়। নার্স দ্রুত এসে রক্ত প্রদান বন্ধ করে দেন। তারপর শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ। রোগীর পরিবারের লোকজন ছুটে যায় জিবি ব্লাড ব্যাঙ্কে। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা মেয়াদ উত্তীর্ণ রক্ত সরবরাহ করে নি। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পরে রোগীর পরিবারের লোকজন।
রোগীর পরিবারের এক ব্যক্তি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গোটা ঘটনার বিষয়ে জানান। তবে এই ঘটনার পর জিবি হাসপাতালের পর মানুষ আর কতটা আস্তা রাখতে পারবে সেটাই এখন বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধান রেফারেল হাসপাতালের তাকমা লাগানো দীর্ঘ পুরনো এই হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে একের পর এক এ ধরনের অভিযোগ উঠে আসলো হাসপাতালে আধিকারিক এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তার টনক নড়েছে না। এবং কোন ধরনের তদন্ত করা হচ্ছে না। মানুষের জীবন বিপদে ফেলে চরম গাফিলতিতে চলছে প্রধান রেফারেল হাসপাতাল। আর সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ফটোসেশন করে কর্মকান্ড তুলে ধরেন হাসপাতালে কিছু চিকিৎসক মহল। কিন্তু হাসপাতালের সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে তাঁরা। সবচেয়ে বড়সড় অভিযোগ হল হাসপাতালের মধ্যে অধিকাংশ জুনিয়র চিকিৎসক এবং জুনিয়র স্বাস্থ্যকর্মী দ্বারা পরিষেবা চলছে। আর সিনিয়র ডাক্তার বাবুরা নিজ চেম্বার খুলে মোটা অংক কামায়ে ব্যস্ত আছেন। মন চাইলে হাসপাতালে আসে, আবার মন না চাইলে হাসপাতালে আসো না। এতে করে রোগীর মিলছে না সঠিক পরিষেবা। কেউ হচ্ছে হয়রানি, কেউ পোহাতে দুর্ভোগ এবং আবার কেউ কিছু হতে না পেরে হাসপাতাল থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে চলে যাচ্ছে বহিঃরাজ্যে। যারাই জিবি হাসপাতালে গিয়ে পরিষেবা চাক্ষুষ করছে তারাই আস্থা হারাচ্ছে হাসপাতালে উপর। কেউ রাখছে না তাদের খোঁজ। এমন পরিষেবা দিয়েই নড়বড়ে জিবি হাসপাতাল।