স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ জুলাই : বর্ষার মরশুমে ধনপুরে থাবা বসালো ডেঙ্গু। হু হু করে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ফলে গত কয়েকদিন ধরে ডেঙ্গু রুখতে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের কাঁটাতারের বেড়ার এপারে ধনপুরে প্রথম পজেটিভ রোগী সনাক্ত হয় গত ২২ জুলাই। এর আগে বহু রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসকরা ভেবেছিলেন টাইফয়েড আক্রান্ত রোগী।
সে অনুযায়ী চিকিৎসা করার পর রোগীদের শারীরিক অবস্থা তেমন উন্নত না হওয়ায় পরবর্তী সময় নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আছে রোগী। তারপর প্রশাসনের শুরু হয় দৌড়ঝাপ। শনিবার পর্যন্ত ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু রোগী রয়েছে। তারা সকলেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালে নয়তো কেউ বাড়িতে। সি এম ও ডা. দেবাশীষ দাসের কাছে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে, তিনি জানান এখন পর্যন্ত ৭৫ জন রোগী ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল ৬২ জন। তাদের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি দেখে জিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে তিনিও সুস্থ হয়ে উঠছেন। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন তিনি। এবং ধনপুরের বাকি চার থেকে পাঁচটি গ্রামে যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের চিকিৎসা চলছে। সিপাহীজলা জেলার আর অন্য কোন জায়গায় আক্রান্ত রোগীর খবর নেই এখন পর্যন্ত। তিনি আরো বলেন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কারোর মৃত্যু হয়নি।
প্রশাসন আক্রান্ত রোগীদের পর্যবেক্ষণে রেখেছে। পাশাপাশি এলাকার গুলিতে সচেতন মূলক কর্মসূচি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশাসনের এক প্রতিনিধি দল মশার উৎপত্তিস্থল অর্থাৎ বৃষ্টির জল সহ পুরনো নোংরা জল যে সব জায়গায় জমাট বেঁধে আছে সেসব জায়গায় গুলি নষ্ট করা হচ্ছে। বাড়ির লোকজনদের সচেতন থাকার বিষয়ে অবগত করা হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রামে গ্রামে মাইকিং করে কিভাবে সচেতন থাকা যায় এবং ভিটামিন ও পুষ্টিকর খাবার খেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে মানুষকে সজাগ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছা সেবকরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের চেম্বারে কোন জ্বরের রোগী আসে তাহলে রোগীকে প্রথমে নমুনা পরীক্ষা করতে হচ্ছে। তারপর তাকে ওষুধ দিয়ে সুস্থ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। পরিস্থিতি আগের থেকে অনেকটাই ভালো অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করা গেছে বেশিরভাগই প্রাপ্তবয়স্ক মহিলারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। কারণ মহিলারা সন্ধ্যার সময় এলাকায় চলাফেরা করেন এবং গল্প করার কারণে তাদের উপর মশা ডেঙ্গুর বিস্তার করছে। তবে খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন সি এম ও ডাক্তার দেবাশীষ দাস।