কলকাতা, ৯ জুন (হি. স.) : পশ্চিমবঙ্গের মানুষের অধিকার তৃণমূল কংগ্রেস কেঁড়ে দিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাই ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই করতে হবে। তবেই, বাংলায় নতুন সূর্যোদয় হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কার্যকালের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জয়নগরে জনসম্পর্ক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। তাঁর ভবিষ্যত বাণী, পশ্চিমবঙ্গে এবং ত্রিপুরার মতোই বামেদের শোচনীয় অবস্থা আগামীদিনে তৃণমূল কংগ্রেসেরও হবে। ভাইপো এবং সমস্ত ভাইয়েরা মিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সর্বনাশ ডেকে আনবেন।
এদিন তিনি উদ্বেগের সুরে বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে গোটা দেশের মানুষ চিন্তিত। সংসদে অন্য সাংসদরা এই রাজ্যের পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ কিভাবে হয়েছে জানতে চাইলে তাঁদের বলেছি, ত্রিপুরা, কেরালা এবং পশ্চিমবঙ্গে বামেদের শাসন মানুষ সহ্য করেছেন। তাঁদের হাত রেহাই পেতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সুযোগ দিয়েছেন। মমতার সেই মা-মাটি-মানুষের সরকারে এখন মায়েদের ইজ্জত লুণ্ঠন হচ্ছে। মাটি রক্তাক্ত হচ্ছে। অথচ প্রতিকার মিলছে না। বরং ধর্ষণের পর জীবন্ত চিতায় তুলে দেওয়ার বীভত্স দৃশ্য দেখে মানুষ শিউরে উঠছেন।
তাঁর আক্ষেপ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু সহ বহু গুণীজনে গর্বিত বাংলার আজ ভীষণ করুণ অবস্থা হয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা বাংলা আজ নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট হওয়ার ঘটনায় লজ্জায় মুখ লুকিয়ে রাখছে। শুধুই মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সুন্দরবনের ভূমিক্ষয় রোধে কেন্দ্র থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এনেছে তৃণমূল সরকার। অথচ সবই নেতারা লুটেপুটে খাচ্ছেন। মানুষের কল্যাণে কেন্দ্রের বরাদ্দে শুধুই তৃণমূলের নেতাদের উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষ একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কটাক্ষ, পশ্চিমবঙ্গে মানুষের কথা বলার অধিকার কেঁড়ে নেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারও কেঁড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, মানুষ থাকার জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করেন। কিন্তু, তৃণমূলের নেতারা টাকা লুকিয়ে রাখার জন্য ফ্ল্যাট বানাচ্ছেন।
তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গরীব মানুষের জন্য জনধন একাউন্ট, বীমা, শৌচালয় নির্মাণের বিভিন্ন যোজনা এনেছেন। কিন্তু, এই রাজ্যে মানুষ সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মায়েদের সম্ভ্রম রক্ষায় শৌচালয় নির্মাণের যোজনা মমতার সরকার পশ্চিমবঙ্গে বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। তৃণমূলের নেতারা সমস্ত শৌচালয় গিলে খেয়ে ফেলেছেন। তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, যে রাষ্ট্রে, সমাজে, পরিবারে মেয়েদের সন্মান নেই, সেই সাম্রাজ্য কখনো টিকে থাকতে পারে না। তাঁর কটাক্ষ, কমিউনিস্টরাও ভেবেছিলেন তাঁদের শাসনেই সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত হবে। কিন্তু, এখন আমরা পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায় তাঁদের শোচনীয় অবস্থা লক্ষ্য করছি। তাঁর দাবি, খুব শীঘ্রই তৃণমূল কংগ্রেসেরও একই অবস্থা হবে। ভাইপো এবং সমস্ত ভাইয়েরা মিলে মমতার সর্বনাশ করে ছাড়বেন।
তাঁর আবেদন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের অধিকার তৃণমূল কংগ্রেস কেঁড়ে নিয়েছে। ২০২৪ সালে কেন্দ্রের ক্ষমতায় আবারও নরেন্দ্র মোদীকে আনতে হবে। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই করতে হবে। তবেই বাংলায় নতুন সূর্যোদয় হবে।